প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সাড়ে তিন বছর আগে তাঁর সরকারের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল বিহার। ভারতীয় সেনায় চুক্তিভিত্তিক অগ্নিবীর নিয়োগ ঘিরে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ছড়িয়েছিল জেলায় জেলায়। এ বার দ্বিতীয় দফার বিধানসভা ভোটের প্রচারে সে রাজ্যে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবসরপ্রাপ্ত সেনানীদের সহায়তায় তাঁর ‘সাফল্যের’ কথা তুলে ধরলেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর হাতিয়ার, ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্প।
২০১৫ সালে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার বক্তৃতায় সেনাবাহিনীর ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্প কার্যকর করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মোদী। শুক্রবার অওরঙ্গাবাদের সমাবেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘অবসরপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা কর্মীদের অ্যাকাউন্টে আমরা এ পর্যন্ত ১ লক্ষ কোটি টাকা স্থানান্তরিত করেছি।’’ নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ আবার পটনায় ক্ষমতায় ফিরবে বলে দাবি করে আত্মবিশ্বাসী মোদীর দাবি, আরজেডি জমানায় ‘জঙ্গলরাজ’ আর ‘কট্টা (দেশি পিস্তল) রাজ’ আর ফিরবে না বিহারে। তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ, ৩৭০ ধারা বাতিল এবং অপারেশন সিন্দুরের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘‘আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা করি।’’ ঘটনাচক্রে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুক্রবারই বিহারে ভোটপ্রচারে গিয়ে সীতামঢ়ীতে ‘জানকী মন্দির’ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অওরঙ্গাবাদের ওই সভায় সুকৌশলে বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধনের অন্দরের মতবিরোধের প্রসঙ্গও তুলেছেন মোদী। প্রায় এক ডজন আসনে বিরোধী দলগুলির ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’য়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে লালুপ্রসাদ-তেজস্বী যাদবদের খোঁচা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসকে এমন সব আসন আরজেডি ছেড়েছে, যেখানে গত ৩৫-৪০ বছরে ওরা জেতেনি।’’ বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার নেতৃত্বের ‘মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে’ তেজস্বী যাদবকে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ ঘোষণা করতে আরজেডি বাধ্য করেছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের হিসাব বলছে, বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় বিহারে ১২১টি আসনে প্রায় ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। সে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে যা সর্বকালীন রেকর্ড। মোদীর দাবি, ভোটদানের এই বিপুল হার তাঁর এবং নীতীশের প্রতি বিহারবাসীর আস্থার বহিঃপ্রকাশ। যদিও ওই সভাতেও এনডিএ-র ‘পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী’ হিসেবে সরাসরি নীতীশের নাম বললেন না তিনি।