Odisha Self-Immolation attempt

তাঁর ঘর থেকে বেরিয়েই নিজের গায়ে আগুন দেন যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলা ছাত্রী! গ্রেফতার ওড়িশার সেই কলেজের অধ্যক্ষ

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে আগেই নিলম্বিত করা হয়েছিল কলেজের অধ্যক্ষকে। নির্যাতিতার বাবার দাবি, অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্যও তিনি চাপ দিচ্ছিলেন ছাত্রীকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৬
Share:

নির্যাতিতার আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় বালেশ্বরের এক কলেজের অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করল পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।

ওড়িশার কলেজে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলা তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় এ বার গ্রেফতার হলেন কলেজের অধ্যক্ষ। অভিযোগ পাওয়ার পরেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় গত শনিবারই কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বালেশ্বরের ওই কলেজের অধ্যক্ষকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করেছিল ওড়িশার উচ্চশিক্ষা দফতর। এ বার তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

ছাত্রীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত অধ্যাপককে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, কলেজে অধ্যক্ষ ওই অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করছিলেন। এই আবহে ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় সোমবার গ্রেফতার করা হল অধ্যক্ষকেও। কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগগ্রহণ কমিটি (আইসিসি)-তে অভিযোগ জানানোর পরেও কেন পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলছিলেন ওই ছাত্রী। কলেজ ক্যাম্পাসে এই নিয়ে বিক্ষোভও দেখাচ্ছিলেন তিনি। গত শনিবার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার আগেও অধ্যক্ষের ঘরে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন ছাত্রী। সেখান থেকে বেরিয়েই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি।

ওড়িশার ওই কলেজ ছাত্রীর শরীর ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। ভুবনেশ্বর এমসে জীবন-মরণ লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। তাঁকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন চিকিৎসকেরাও। ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টার পরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন তরুণীর বাবা। তাঁর অভিযোগ, অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য অধ্যক্ষ চাপ দিচ্ছিলেন তরুণীকে। গত শনিবার অধ্যক্ষের ঘর থেকে বেরিয়েই যে তাঁর মেয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন, সে কথাও বার বার উল্লেখ করছেন তরুণীর বাবা।

Advertisement

তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টার পরে গোটা ওড়িশা জুড়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। ওড়িশার ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে আসরে নেমেছে ওড়িশা পুলিশের অপরাধদমন শাখা। দুই সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ওড়িশার উচ্চশিক্ষা দফতরও পৃথক ভাবে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

ওড়িশার বালেশ্বরের এক কলেজে তাঁর বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন ওই ছাত্রী। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি। শনিবার এই নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ক্যাম্পাসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। ছাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন কলেজেরই এক ছাত্র। নির্যাতিতার গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে তিনিও দগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পরে তড়িঘড়ি দু’জনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসে স্থানান্তর করা হয়।

ভুবনেশ্বর এমসে ভর্তি হওয়ার পর থেকে শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি ওড়িশার কলেজের সেই নির্যাতিতার। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, তন্ত্র পুড়ে গিয়েছে। কিডনিও পুড়ে যাওয়ার কারণে তা এখন কাজ করছে না। তরুণীর ডায়ালিসিস চলছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসায় পরামর্শ দিচ্ছেন দিল্লি এমসের বিশেষজ্ঞেরাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement