Priyanka Gandhi Vadra

বাংলো রাখার ‘অনুরোধ’ নিয়ে অস্বস্তি প্রিয়ঙ্কার, নাম জড়াল আহমেদের

নরেন্দ্র মোদী সরকার দাবি করল, কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল প্রিয়ঙ্কাকে আরও কিছু দিন ওই বাংলোয় থাকতে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০২:৩৪
Share:

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ছবি: সংগৃহীত।

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে কেন্দ্র দিল্লির বাংলো খালি করার নির্দেশ দিলেও তিনি তা নিয়ে হইচই করেননি। ঠিক সময়ে বাংলো ছেড়ে দেবেন বলেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ তাঁকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে নরেন্দ্র মোদী সরকার দাবি করল, কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল প্রিয়ঙ্কাকে আরও কিছু দিন ওই বাংলোয় থাকতে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন।

Advertisement

বিড়ম্বনার মুখে প্রিয়ঙ্কা দাবি করেছেন, তিনি এমন কোনও অনুরোধ করেননি। করছেনও না। নির্দিষ্ট সময়েই তিনি বাংলো খালি করে দেবেন। তাঁর হয়ে কেউ অনুরোধ করলে, তাঁকে প্রিয়ঙ্কা ধন্যবাদও জানিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস নেত্রীর এই দাবিতে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি আহমেদ পটেল প্রিয়ঙ্কাকে না-জানিয়ে, উপযাচক হয়ে এই অনুরোধ করেছিলেন? গোটা বিষয় প্রকাশ্যে আসার পরে সনিয়া গাঁধীর দশ জনপথের বাড়িতে হাজির হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু তার পরে কী হয়েছে, তা নিয়ে রহস্য থেকে গিয়েছে।

কংগ্রেসের মধ্যে এমনিতেই রাহুল গাঁধীর শিবিরের সঙ্গে আহমেদ পটেলের শিবিরের দ্বন্দ্ব চলছে। আহমেদকে ইডি টানা জেরা করলেও কংগ্রেসের মুখপাত্ররা কেউ মুখ খোলেননি। আহমেদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন একমাত্র প্রিয়ঙ্কাই। এ বার আহমেদের জন্যই প্রিয়ঙ্কাকে অস্বস্তিতে পড়তে হওয়ায় নাটক নতুন মোড় নিয়েছে। কারণ, বাংলো ছাড়ার নোটিস নিয়ে হইচই করলে বিজেপি পাল্টা গাঁধী পরিবারকে আক্রমণের সুযোগ পেয়ে যাবে। প্রিয়ঙ্কা বা কংগ্রেস তাই এ নিয়ে হইচই করেননি। উল্টে কংগ্রেস নেতাদের যুক্তি ছিল, উত্তরপ্রদেশের ভোটের জন্য প্রিয়ঙ্কা লখনউকে ঘাঁটি করবেন। সেখানে তাঁর বাড়িও ঠিক হয়ে গিয়েছে। আহমেদের ‘অনুরোধ’ তাতে জল ঢেলে দিল কি না, তা নিয়ে কংগ্রেস শিবিরে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরে, কেন্দ্রের আবাসন মন্ত্রক প্রিয়ঙ্কাকে দিল্লির লোদী এস্টেটের বাংলো খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল। প্রিয়ঙ্কার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি নির্দিষ্ট সময়েই বাংলা ছাড়বেন। কিন্তু আজ সকালে আচমকাই খবর ছড়িয়ে পড়ে, প্রিয়ঙ্কার অনুরোধ মেনে মোদী সরকার আরও কিছু দিন তাঁকে ওই বাংলোয় থাকতে দেওয়ার অনুমতি দিচ্ছে। প্রিয়ঙ্কা নিজে একে ‘ফেক নিউজ়’ বলে খারিজ করে দেন। জানান, তিনি এমন কোনও অনুরোধ করেননি।

এর পরেই কেন্দ্রীয় আবাসন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী টুইট করে দাবি করেন, এক জন ‘ক্ষমতাশালী কংগ্রেস নেতা’ তাঁকে ৪ জুলাই বেলা ১২টা ৫ মিনিটে ফোন করে অনুরোধ করেছিলেন, লোদী এস্টেটের যে ৩৫ নম্বর বাংলোয় প্রিয়ঙ্কা রয়েছেন, তা যেন অন্য এক জন কংগ্রেস সাংসদের নামে বরাদ্দ করা হয়। তা হলে প্রিয়ঙ্কা সেখানে থাকতে পারবেন।

সরাসরি আহমেদের নাম না-করলেও তিনি যে সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার কথাই বোঝাচ্ছেন, তা স্পষ্ট করতে পুরী বলেন, ওই নেতার দলে যথেষ্ট প্রভাব। কংগ্রেসের গঠনতন্ত্রে তিনি উপরের দিকেই রয়েছেন। ওই রাজনৈতিক উপদেষ্টাই গাঁধী পরিবারের হয়ে কথা বলেন এবং কাজকর্ম করেন। তাঁর অনুরোধেই সরকার দু’মাসের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছিল।

স্বাভাবিক ভাবেই এতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে যান প্রিয়ঙ্কা। তিনি পুরীকে জবাবে বলেন, ‘‘কেউ ফোন করলে তাঁকে ধন্যবাদ। আপনার বিবেচনার জন্যও ধন্যবাদ। কিন্তু সত্যিটা বদলাচ্ছে না। আমি কোনও অনুরোধ করিনি। করছিও না। উৎখাতের নোটিস মেনে ১ অগস্টের মধ্যেই বাড়ি খালি করে দেব।’’ প্রিয়ঙ্কার স্বামী রবার্ট জানান, করোনার মধ্যেও তাঁরা বাড়ির জিনিসপত্র বাঁধাছাদা করছেন। নির্দিষ্ট সময়ের এক সপ্তাহ আগেই বাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে। পুরী পাল্টা টুইট করেন, ‘‘প্রকাশ্যে মুখ খোলার আগে দলের মধ্যে বিষয়টা মিটিয়ে নিন। একই সঙ্গে অধিকারবোধ ফলানো ও বঞ্চনার শিকার সাজা চলতে পারে না।’’

কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, সরকার তো আগেই ওই বাংলো বিজেপি মুখপাত্র অনিল বালুনির জন্য বরাদ্দ করেছে। তা হলে কেন এ নিয়ে হইচই করা হচ্ছে? পুরীর উদ্দেশে রণদীপ বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কাজি কোনও সুবিধা চাননি। এই বিষয়টি শেষ হয়ে গিয়েছে। মিথ্যে নিয়ে উত্তেজনা ছড়াবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন