পাশে: আওরঙ্গজেব রোড ক্লাস্টার হাউসিংয়ে আশিসের পরিবারের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। রাহুল গাঁধীর বাসভবনে ঢোকার আগে। পিটিআই
রাহুল গাঁধীকে সভাপতি করে কংগ্রেস সদর দফতরে নিজের ঘরটি ছেড়ে দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। তার আগে সহ-সভাপতি হিসেবে পাশের ঘরটিতে বসতেন রাহুল। কিন্তু সভাপতি হওয়ার পর সেই ঘরটির উপরে অনেকের নজর থাকলেও রাহুল সেটি কাউকে দেননি। আজ দিলেন প্রিয়ঙ্কাকে।
২৪ আকবর রোডে এআইসিসি দফতরে রাহুলের পাশের ঘরটিতেই নেমপ্লেট বসল দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক (পূর্ব উত্তরপ্রদেশ) প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার। উল্টো দিকে আর এক সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকেও ঘর দেওয়া হল, যেটিতে আগে বসতেন দিগ্বিজয় সিংহ। সিন্ধিয়া দায়িত্ব নেবেন আগামিকাল।
আমেরিকা থেকে ফিরেছেন গত কাল রাতেই। তার পর থেকেই রাহুলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। কাল রাতেও কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নতুন সভাপতি পদের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করতে উদ্যোগী হন সনিয়া-কন্যা। আজ সন্ধেয় রাহুলের বাসভবনে যান উত্তরপ্রদেশের ঘুঁটি সাজানোর বৈঠকে। রাহুল সেখানে সাফ জানিয়েছেন, আপাতত পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব থাকলেও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাতীয় স্তরে ভূমিকা রয়েছে প্রিয়ঙ্কার। ভবিষ্যতে বাংলা-সহ বিহার, তামিলনাড়ুতেও দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান। একটি কাজে সাফল্য এলেই পরের কাজ দেবেন। প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে চেয়ে দলের থেকে দাবি আসছে অন্যান্য রাজ্য থেকেও।
কংগ্রেস সূত্র বলছে, আপাতত স্থির হয়েছে বৃহস্পতিবার রাহুল দলের সাধারণ সম্পাদকদের যে বৈঠক ডেকেছেন, তাতে প্রথম আনুষ্ঠানিক আবির্ভাব হবে প্রিয়ঙ্কার। নিজের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট হবে তাঁর। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের জন্য একটি নিজের টিম তৈরির কাজও আমেরিকা থেকেই শুরু করে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। আগামী সপ্তাহে লখনউ গিয়ে সেই টিমের সঙ্গে বসবেন। লখনউয়ে একটা রোড-শো করারও পরিকল্পনা করছে দল।
৩৫ লোদি এস্টেটের বাংলো থেকে বেরোনোর সময় আজ ক্যামেরায় প্রথম ধরা পড়েন প্রিয়ঙ্কা। দলের পদ পাওয়ার পরে প্রথম বার। সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন রাহুলের বাসভবনে। সাংবাদিকরা ক্যামেরা তাক করে সামনের ফটকে। আর প্রিয়ঙ্কা ঢুকলেন পিছনের দরজা দিয়ে। এবং খানিকটা পরে।
কিন্তু কেন? নতুন দায়িত্বে এসেই সাংবাদিকদের এড়াচ্ছেন!
একটু পরে স্পষ্ট হল, প্রিয়ঙ্কা গিয়েছেন রাহুলের বাসভবনের পিছনে বস্তি এলাকায়। সেখানে আশিস যাদব নামে এক প্রতিবন্ধী কিশোরকে প্রতি মাসে দেখে যান প্রিয়ঙ্কা। তার চিকিৎসা, দেখভাল, লেখাপড়ার আয়োজন— সব ব্যবস্থা করেন নিয়মিত। আজও গিয়েছেন সেখানে। এ সব প্রকাশ্যে আনতে চাননি আগে। এ বারই হল ব্যতিক্রম। হাসিমুখে আশিসের বোন ও পরিবারের সঙ্গে ছবিও তুললেন প্রিয়ঙ্কা। রাজনীতির ময়দানে নিজের দৌড় শুরু করতে চলেছেন। বলে এসেছেন, আশিসকেও ঘর থেকে বেরিয়ে আকাশ দেখতে হবে এ বার। তার জন্য একটা হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করতে হবে।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ‘‘ছক ভাঙা ক্যারিশমা। ঠিক এ ভাবেই তো সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন প্রিয়দর্শিনী ইন্দিরা গাঁধী।’’