চিরাচরিত রেওয়াজ তো ছিলই। কিন্তু সম্প্রতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের মধ্যে ‘মানসিক চাপ এবং অস্তিত্বের সঙ্কট’ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাদকাসক্তি। তাঁরা মানসিক রোগেও ভুগছেন অনেক বেশি। ভারতের আদিবাসী স্বাস্থ্য নিয়ে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এ কথা জানানো হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘আদিবাসীদের একটি বড় অংশ অবিরত সংঘাতের মধ্যে জীবনযাপন করে। ১০৬টি অতি বামপন্থী উপদ্রুত জেলায় মোট আদিবাসী জনসংখ্যার ৩১% বাস করেন। এর মধ্যে ৪০টি জেলায় ২৫%-এরও বেশি
আদিবাসী। একই ভাবে মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত উত্তরপূর্বাঞ্চলে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটি। ফলে হিংসা এঁদের জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছে। একটা বয়সের পরে এঁদের অনেকেরই মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে।’ কেন্দ্রের রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে— জমি অধিগ্রহণ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং জীবনধারণের প্রয়োজনে স্থানান্তরিত হওয়ার ফলে এই জনসমাজের মনে গভীর ক্ষত তৈরি হয়। উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ধার ঘেঁষেই মাদক করিডর। অনেকেই মানসিক চাপ সামলাতে না পেরে সহজলভ্য মাদকের আশ্রয় নিচ্ছেন। রিপোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকারোক্তি— আদিবাসী জীবনের মাদকের প্রভাব নিয়ে কোনও পর্যালোচনা সে ভাবে হয়নি। দুর্দশাগ্রস্তদের পর্যাপ্ত সাহায্যের ব্যবস্থাও নেই।
‘ন্যাশনাল নিউট্রিশন মনিটরিং ব্যুরো’-র সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে আদিবাসী পুরুষদের মধ্যে মদ্যপায়ীর সংখ্যা (৫৯%) মহিলাদের (১৪%) তুলনায় অনেকটাই বেশি।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় সমীক্ষা জানাচ্ছে আদিবাসী নন এমন জনসংখ্যার তুলনায় (৩০%) প্রায় ১৯% বেশি মদ্যপায়ী রয়েছেন আদিবাসীদের মধ্যে। দেখা যাচ্ছে অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ় এবং ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীদের
মধ্যে মানসিক অসুস্থ এবং মদ্যপায়ীদের সংখ্যা দেশের অন্য প্রান্তের তুলনায় বেশি।