ডাল নিয়ে ডামাডোলে কিছু রাজ্যকে দোষারোপ কেন্দ্রের

ডাল মে কুছ কালা হ্যায়! ‘কালা’ থাকুক বা না থাকুক, ডালের দাম উত্তরপ্রদেশ ভোটের আগে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। উত্তরপ্রদেশে ভোটের হাওয়া গরম হয়ে উঠছে। আর সেখানকার মানুষের প্রিয় অড়হর ডালের দাম যে ভাবে আকাশ ছুঁয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে বিজেপির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৯:৫৯
Share:

ডাল মে কুছ কালা হ্যায়!

Advertisement

‘কালা’ থাকুক বা না থাকুক, ডালের দাম উত্তরপ্রদেশ ভোটের আগে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। উত্তরপ্রদেশে ভোটের হাওয়া গরম হয়ে উঠছে। আর সেখানকার মানুষের প্রিয় অড়হর ডালের দাম যে ভাবে আকাশ ছুঁয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে বিজেপির। তাদের আশঙ্কা, ডালের দাম বিরোধীদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠতে দেরি নেই। ঢাল হিসেবে তাই রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে মোদী সরকার। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ সহ কিছু রাজ্য কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের যুক্তি, ‘‘আমরা রাজ্যগুলিকে কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলতে পারি। নিজেরা তা করতে পারি না। কারণ রাজ্যের হাতেই সেই ক্ষমতা রয়েছে।’’

বুধবারই ডালের দাম নিয়ে অরুণ জেটলির নেতৃত্বে মন্ত্রীদের বৈঠক বসেছিল। আর আজ দেশের বহু জায়গায় অড়হর ডালের দাম কেজিতে ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। গত কাল ঠিক হয়েছিল, মায়ানমার ও আফ্রিকা থেকে ডাল আমদানির চেষ্টা হবে। সিদ্ধান্ত হয়, কেন্দ্র ৮ লক্ষ টন ডাল মজুত করবে। যাতে প্রয়োজন মতো তা বাজারে ছাড়া যায়। কেন্দ্রের বক্তব্য, রাজ্যগুলি চাইলে কেন্দ্রের থেকে ডাল কিনে বাজারে সস্তায় বিক্রি করতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র অন্ধ্র, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র কেন্দ্রের থেকে ডাল নিয়েছে। রাজস্থান নিজেদের চাহিদার কথা জানিয়েছে। বাকি রাজ্য কোনও সাড়াই দেয়নি। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকেও ডাল মজুত করতে বলা হয়েছে। ডালের উপর থেকে ভ্যাট, মাণ্ডি কর ও অন্যান্য স্থানীয় কর মকুবেরও অনুরোধ করা হয়েছে। তা হলেও ৫-৭ % দাম কমতে পারে।

Advertisement

রাজ্যের উপরে দায় চাপানোর পিছনে একমাত্র কারণ যে রাজনীতি, তা সবাই মানছেন। জিনিসের অগ্নিমূল্য রাজনৈতিক দলগুলির ভবিষ্যৎ ঠিক করে দিয়েছে, এমন উদাহরণ কম নয়। দিল্লিতে সুষমা স্বরাজের গদি গিয়েছিল পেঁয়াজের ঝাঁঝে। শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধেও অগ্নিমূল্যে রাশ না পরানোর অভিযোগ উঠেছিল। উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ উঠুক, তা বিজেপি চায় না। খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রক তাই পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলছে, উত্তরপ্রদেশে ২০১৪-য় কালোবাজারির বিরুদ্ধে ২৫ হাজার অভিযান হয়েছিল। ২০১৫-য় হয়েছে মাত্র ৫টি। কালোবাজারি আটকাতে অখিলেশ সরকারের ব্যর্থতার এটা বড় প্রমাণ।

কৃষি মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, ডালের দামে লাগাম পরানো সহজ নয়। প্রতি বছরই কানাডা, মায়ানমার, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ডাল আমদানি করতে হয়। কানাডা থেকে মুসুর, মায়ানমার থেকে অড়হর, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসে ছোলার ডাল। এ দিকে পর পর দু’বছরের খরার ধাক্কায় ডালের উৎপাদন ২০ লক্ষ টন কমে এসেছে। ২০১৫-’১৬র জুলাই থেকে জুন মরসুমে ডাল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টন। সেখানে চাহিদা ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টন। ডালে তাই কোনও আমদানি শুল্ক নেই। বিশ্বের বাজারে যে ডাল উৎপাদন হয়, তার সিংহভাগই ভারত কিনে নেয়। ফলে ভারতে চাহিদা বাড়লে বিশ্ব বাজারেও ডালের দাম বেড়ে যায়। ব্যবসায়ী ও কালোবাজারিরা এখন সেই সুযোগই নিচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন