National News

আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ২০০ শতাংশ করা হল, পাকিস্তান নিয়ে আরও কড়া ভারত

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এমএফএম তকমা তুলে নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে পাকিস্তানকে অনেকটা দুর্বল করে দেওয়া যাবে। কারণ এই তকমা তুলে নেওয়া মানে দু’দেশের মধ্যে যে বার্ষিক বাণিজ্য কমে গিয়ে ২০০ কোটিতে ডলারে দাঁড়াবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই হবে পাকিস্তানের কাছে বড় ধাক্কা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:৩০
Share:

পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত জিনিসের উপর আবগারি শুল্ক বাড়াল ভারত।

হাতে মারার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে তার আগে পাকিস্তানকে ভাতে মারার প্রক্রিয়াটা সেরে ফেলেছে ভারত।

Advertisement

পুলওয়ামায় হামলার পর দিনই পাকিস্তানের ‘মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন)’ বা সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ-এর তকমা কেড়ে নিয়েছিল ভারত। এ বার সে দেশ থেকে আমদানিকৃত সব জিনিসের উপর ২০০ শতাংশ আবগারি শুল্ক চাপিয়ে দিল ভারত। ফলে বাণিজ্যিক ভাবে ইমরান খানের দেশ আরও বেকায়দায় পড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে হামলা চালায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন জওয়ান। পাকিস্তানকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে প্রথমেই বাণিজ্যিক ভাবে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে যাতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া যায়, কূটনৈতিক স্তরে সেই প্রক্রিয়াও শুরু করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় কেন্দ্র। পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রথম ধাপটা ছিল এমএফএন-এর তকমা প্রত্যাহার এবং দ্বিতীয় ধাপটা কী হবে শনিবারেই ঘোষণা করে দিয়েছিল কেন্দ্র।

Advertisement

ওই দিন সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি টুইট করে জানান, “পুলওয়ামার ঘটনার পর পাকিস্তানের এমএফএন তকমা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ভারত। এ বার সে দেশ থেকে আমদানিকৃত জিনিসের উপর আবগারি শুল্ক বাড়িয়ে ২০০ শতাংশ করা হল।”

আরও পড়ুন: সিআরপিএফ কনভয়ে হামলার কড়া প্রত্যুত্তরের প্রস্তাবে আপত্তি উঠল সর্বদলীয় বৈঠকে

এমএফএন স্টেটাস কী?

ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও)-র সদস্য দেশগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনও দেশ অন্য একটি দেশকে এই এমএফএন স্টেটাস দিতে পারে। এর ফলে বৈষম্যহীন বাণিজ্যের সমস্ত রকম সুযোগ পায় এমএফএন স্টেটাসপ্রাপ্ত দেশটি। এমএফএন স্টেটাসপ্রাপ্ত দেশকে বৈদেশিক বাণিজ্যে ছাড়, অতিরিক্ত কিছু সুবিধা, শুল্ক হ্রাস ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফস বা গ্যাট চুক্তির প্রথম ধারাতেই এটা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ডব্লিউটিও-র সদস্য দেশ হিসেবে অন্য দেশগুলি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে সুযোগ-সুবিধা পায় সেগুলিও পেয়ে থাকে এই এমএফএন স্টেটাস প্রাপ্ত দেশ।

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এমএফএম তকমা তুলে নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে পাকিস্তানকে অনেকটা দুর্বল করে দেওয়া যাবে। কারণ এই তকমা তুলে নেওয়া মানে দু’দেশের মধ্যে যে বার্ষিক বাণিজ্য কমে গিয়ে ২০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই হবে পাকিস্তানের কাছে বড় ধাক্কা।

আরও পড়ুন: ‘আর কোনও মায়ের কোল যেন খালি না-হয়’

পুলওয়ামার হামলায় ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে ভারত যা পদক্ষেপ করবে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ট্রাম্পের দেশ। হামলার তীব্র নিন্দা করেছে বিভিন্ন দেশ। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও চাপ বাড়তে শুরু করেছে পাকিস্তানের উপর। ফলে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক ভাবে সাঁড়াশি চাপে পড়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর ধূসর তালিকায় রয়েছে। এফএটিএফ হল একটি ইন্টার গভর্নমেন্টাল বডি। যারা জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহ আটকানোর কাজ করে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বার বারই অভিযোগ উঠেছে তারা জঙ্গিদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। যদি এফএটিএফ-এর কালো তালিকায় নাম উঠে যায় পাকিস্তানের তা হলে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-এর মতো সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। ধূসর তালিকা নয়, এফএটিএফ-এর কালো তালিকাতে পাকিস্তানকে ফেলা হোক, এটাই এখন চাইছে ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন