অবৈধ অভিবাসী সন্দেহ ধরপাকড় সংক্রান্ত মামলা। ছবি: এআই।
অবৈধবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য হরিয়ানা সরকারের কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি (এসওপি) রয়েছে কি? প্রশ্ন তুলল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। সম্প্রতি হরিয়ানার গুরুগ্রামে বেশ কয়েক জনকে ভুল করে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, পাকড়াও করে তাঁদের ‘অমানবিক’ পরিস্থিতিতে রেখে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। এই বিতর্কের আবহে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে।
জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবীর আর্জি, অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বনের নির্দেশ দিক আদালত। বুধবার হাই কোর্টে তিনি জানান, ভাষাগত দিক থেকে সংখ্যালঘু কিছু মানুষকে ধরে এনে অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত করছে গুরুগ্রাম পুলিশ। তাঁদের কাছে আধার নথি, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড-সহ অন্য নথি দেখানোর পরেও ধরপাকড় করা হয়েছে। আইনজীবী বলেন, “তাঁদের (সন্দেহভাজনদের) বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টারে আটক করে রাখা হয়েছিল। কখনও কখনও ২০০-৩০০ জনের এক একটি দলকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরিবারের সদস্য বা আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করারও কোনও সুযোগ ছিল না।” মামলাকারী আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত আটক হওয়া ব্যক্তিদের ভারতীয় নাগরিক বলে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু তার পরেও, আটক হওয়া ব্যক্তিদের বেশ কয়েক দিন আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
মামলাকারীর বক্তব্য, পরিযায়ীদের চিহ্নিত করার একটি পদ্ধতি থাকা উচিত। হয় সে রাজ্যে এমন কোনও কোনও পদ্ধতি নেই, কিংবা সেটি ‘লঙ্ঘন’ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বেশ কিছু নথির প্রসঙ্গও আদালতে তুলে ধরেন তিনি। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, মামলাকারীর দাবি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘ফরেনার্স ব্র্যাঞ্চ’ নাম করে ওই নথিতে বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের পাকড়াও করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি (এসওপি)-র কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে উল্লেখ নেই।
অন্য দিকে, হরিয়ানা সরকারের আইনজীবীর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মোতাবেকই কাজ করেছে সে রাজ্যের পুলিশ। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, হরিয়ানা সরকার আদালতে জানিয়েছে, “অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করার জন্য গুরুগ্রামে বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছিল। যাঁদের কাছে নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ ছিল না, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে, তাঁদের হোল্ডিং সেন্টারে রাখা হয়েছিল।”
এ কথা শুনে হাই কোর্ট জানিয়েছে, অবৈধবাসীদের চিহ্নিত করতে কী পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তা আদালতে জমা করতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত কোনও নথি রয়েছে কি না, তা ‘রেকর্ড’ আকারে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে হরিয়ানা সরকারকে। অন্যথায় হরিয়ানা সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে যে, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই।