দেশে নগদবিহীন লেনদেন চালু করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু মোবাইল ব্যাঙ্কিং ও ই-কমার্সের তোড়ে গরিব মানুষ যাতে সর্বস্বান্ত না হন তা নিশ্চিত করতে তাঁকে বার্তা দিল সঙ্ঘ পরিবারই।
৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সময় থেকেই প্রধানমন্ত্রী নগদবিহীন অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সওয়াল করে চলেছেন। নোট বাতিলে গরির মানুষের লাভ হবে বলে দাবি করছেন তিনি। মোদীর মতে, গোটা দেশে নগদবিহীন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সব থেকে বড় অস্ত্র স্মার্টফোন। এর ব্যবহার রপ্ত করলে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু সঙ্ঘের হিন্দি মুখপত্র ‘পাঞ্চজন্য’-র সর্বশেষ সংখ্যায় দেশের বাস্তব অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছে। পত্রিকাটির প্রচ্ছদ নিবন্ধের বিষয় হল, সাইবার হ্যাকিং। কয়েকটি লেখা ও সাক্ষাৎকারে জাতীয় নিরাপত্তা থেকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সামনে চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে এখানে।
সঙ্ঘের মুখপত্রের একটি লেখায় বলা হয়েছে, ‘‘একমাত্র আধুনিক মোবাইলেই ই-ওয়ালেট ব্যবহার করা সম্ভব। কিন্তু আজও দেশের অনেকের স্মার্টফোন ও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নেই। দেশে মোট ১০০ কোটি লোক মোবাইল ব্যবহার করলেও এর মধ্যে মাত্র ৩০ কোটি মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।’’ সঙ্ঘের মুখপত্রের মতে, বাকি ৭০ কোটি লোক তার লাভ পাবেন তখনই যখন তাঁদের হাতে স্মার্টফোন আসবে। মুখপত্রের মতে, ‘‘ই-কমার্স ও ই-ওয়ালেটের নিরাপত্তার বিষয়ে কিছু লোকের আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে ব্যাঙ্কের গুপ্ত তথ্য চুরি হয়েছে। টাকা চুরি হচ্ছে এটিএম থেকেও।’’ মুখপত্রটির মতে, হ্যাকাররা ব্যাঙ্ক ও অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি করতে পারে। ভারতে এখনও সাইবার সুরক্ষা তেমন শক্তিশালী নয়।
সঙ্ঘের মুখপত্রের একটি নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘‘ইন্টারনেটে আপনি যেমন সার্চ করেন, আপনাকেও সার্চ করা হয়।’’ স্মার্ট ফোনে ডাইনলোড করা অ্যাপস ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আর একটি নিবন্ধে।
নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জেরে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছিল সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ বা বিএমএস। এ বার এ দেশে মোবাইল ব্যাঙ্কিং ও ই-কমার্সের পরিধি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হল সঙ্ঘের মুখপত্রে। আর এ সবে দেশের সাধারণ মানুষের টাকাপয়সার সুরক্ষার দিকটি জড়িয়ে থাকার কথা তুলেও বার্তা দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রীকে।
‘পাঞ্চজন্য’-র মতে, এ দেশে ইন্টারনেটের বিকাশ যত দ্রুত হচ্ছে, নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা তত বাড়ছে না। ফলে হ্যাকিং আটকানো সব থেকে জরুরি। কারণ জাতীয় নিরাপত্তাকে বারবার নিশানা করছে চিন ও পাকিস্তানের হ্যাকাররা। সে দেশের সেনা এই সব হ্যাকারের সঙ্গে সব সময়েই জুড়ে থাকছে।