রাফালের ‘গোপন নথি’ কি প্রামাণ্য? রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট

বুধবার পুরনো রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত না নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শুধু এইটুকু রায়ই দেবে, ওই নোট প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রাহ্য হবে কি না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে রাফাল চুক্তির গোপন ফাইলের নথি চুরি গিয়েছিল বলে সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই ‘গোপন নথি’ আদালতে ‘প্রামাণ্য নথি’ হিসেবে গ্রাহ্য হবে কি না, তা নিয়ে বুধবার রায় ঘোষণা করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

এর আগে রাফালে সিবিআই তদন্তের আর্জি সুপ্রিম কোর্ট নাকচ করে দিয়েছিল। তার পরে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা সংক্রান্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোপন নোট সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়। তাতে দেখা যায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল যখন ফ্রান্সের সঙ্গে দর কষাকষি করছিল, সে সময়েই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সমান্তরাল দর কষাকষি করেছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসারেরা তাতে আপত্তিও তোলেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। ওই নথি নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিবিআই তদন্ত নাকচ করে দেওয়ার রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরি, প্রশান্ত ভূষণরা। সরকারের যুক্তি ছিল, ওই গোপন নোট আদালতে প্রামাণ্য হিসেবে স্বীকৃত হতে পারে না। কারণ মন্ত্রক থেকে ওই ফাইল চুরি গিয়েছে। পরে সরকার জানায়, বেআইনি ভাবে ওই নথি ফোটোকপি করে নেওয়া হয়েছে। তাই আদালত তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

বুধবার পুরনো রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত না নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শুধু এইটুকু রায়ই দেবে, ওই নোট প্রামাণ্য নথি হিসেবে গ্রাহ্য হবে কি না। তবে আদালত তা মানলে রায় পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনাও অনেকখানি কমে যাবে বলে আইনজীবীদের মত।

Advertisement

এরই মধ্যে আজ কংগ্রেস নতুন করে সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযোগ তুলেছে, রাফাল নির্মাতা দাসো ও অনিল অম্বানীর সংস্থাকে সুবিধা করে দিতেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার প্রক্রিয়া বা ‘ডিফেন্স প্রোকিওরমেন্ট প্রসিডিওর’ বদলে ফেলেছিল মোদী সরকার। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা বলেন, ২০১৫-র এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাদঁ যৌথ বিবৃতি দিয়ে ১২৬টি-র বদলে ৩৬টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। ৫ অগস্ট মোদী সরকার চুপিচুপি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার প্রক্রিয়া বদলে ফেলে। যাতে দাসো সংস্থার বিরাট সুবিধা হয়ে যায়। এক, তারা কী ভাবে ও কোন ভারতীয় সংস্থাকে বরাত দেবে তা জানানোর দরকার ছিল না। কোন মাপকাঠিতে ভারতীয় সংস্থাকে ওই বরাত দেওয়া হচ্ছে, তা জানানোরও দরকার পড়েনি।

খেরার অভিযোগ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ২০১৩-র ইউপিএ-সরকারের প্রক্রিয়া মেনেই রাফাল কেনা হয়েছে। বাস্তব হল, ২০১৫-তে মোদী সরকার সেই প্রক্রিয়া বদলে ফেলে। মোদীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর বসায়। যাতে অনিল অম্বানীর বরাত পেতে সুবিধা হয়।

আজ মোদী এক সাক্ষাৎকারে রাহুল গাঁধীর নাম না করে বলেন, ‘‘গোটা বিরোধী শিবির রাফাল প্রসঙ্গ তুলছে না। এক জন এই প্রসঙ্গ তুলছে। তাঁর দলের লোকেরাও তাঁকে এই বিষয়টি ছেড়ে দিতে বলেছেন। কিন্তু তিনি তাঁর বাবার বফর্স কেলেঙ্কারির কাদা পরিষ্কার করতে চান। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন