কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে কথার আগে সমীহ আদায়ের চেষ্টা রাহুলের

জাল যত ছড়াচ্ছে, পারদও তত চড়ছে। কাল সংসদে কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনার আগে আজ মুখ খুললেন রাহুল গাঁধী। দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণের মুখে সনিয়ার মতো আক্রমণাত্মক লাইন না নিয়ে বরং খেললেন সমীহ আদায়ের তাস। বললেন, ‘‘আমাকে সবসময় নিশানা করা হয়েছে। নিশানায় এসে আমি খুশি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ২১:০৯
Share:

জাল যত ছড়াচ্ছে, পারদও তত চড়ছে। কাল সংসদে কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনার আগে আজ মুখ খুললেন রাহুল গাঁধী। দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণের মুখে সনিয়ার মতো আক্রমণাত্মক লাইন না নিয়ে বরং খেললেন সমীহ আদায়ের তাস। বললেন, ‘‘আমাকে সবসময় নিশানা করা হয়েছে। নিশানায় এসে আমি খুশি।’’

Advertisement

কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের অভিমুখ এখন সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর দিকে রেখেই এগোতে চাইছে বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদী সরকার। কপ্টার-দুর্নীতিতে ঘুষ খেয়েছেন সনিয়া, এই অভিযোগ করেছে বিজেপি। আর ইতালির দালালকে নিজের পারিবারিক সংস্থায় নির্দেশক করেছেন রাহুল গাঁধীর সহায়ক, এই বলে বিজেপির আর এক সাংসদ গাঁধী পরিবারকে আপাদমস্তক ঘেরবার বৃত্তটি সম্পূর্ণ করেছেন। এরই মধ্যে আগামিকাল রাজ্যসভায় কপ্টার-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তার আগেই আজ এল রাহুলের মন্তব্য। মোদী সরকারের মন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেন, ‘‘অনেকেই সমীহ আদায়ের তাস খেলতে পছন্দ করেন। রাহুলও তা করলে স্বাগত।’’

কিন্তু কংগ্রেসও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আজ বলেন, ‘‘আমরাও সংসদে আলোচনা চাইছি। তাতে সত্য উদ্ঘাটিত হবে। বিজেপির তোলা কোনও অভিযোগেরই সত্যতা নেই। রাহুল গাঁধীর সহায়ক কণিষ্ক সিংহের সঙ্গে অভিযুক্ত সংস্থার দূরদূরান্তেও কোনও সম্পর্ক নেই।’’ কপ্টার-দুর্নীতিতে সাফাই দেওয়া ছাড়াও কংগ্রেসের হাতে অবশ্য বাড়তি দু’টি অস্ত্র রয়েছে। এক, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে গুজরাতে গ্যাস উত্তোলনে রাজকোষের ঘাটতি সম্পর্কে সিএজি-র রিপোর্ট। আর দুই, রাষ্ট্রপুঞ্জের সালিশি আদালতের ভারতে আটক ইতালীয় মেরিনকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ।

Advertisement

আজ যে কারণে অরুণ জেটলিকে সংসদে সাফাই দিয়ে বলতে হয়, এটি দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি হস্তক্ষেপ। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, সরকারের দুর্বল যুক্তির কারণে মেরিনকে এখন ছেড়ে দিতে হবে। ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্ট যদি রায় দেয়, তা হলে ফের নিয়ে আসতে হবে। সেই প্রক্রিয়া বেশ দুষ্কর। গুজরাতের গ্যাস উত্তোলনের বিষয়টি সংসদে উত্থাপিত হওয়ার আগে আজ বিজেপির পক্ষ থেকে আট পৃষ্ঠার একটি সাফাইনামা তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নরেন্দ্র মোদী বা অন্য কোনও মন্ত্রীর কোনও লেনাদেনা ছিল না কে জি বেসিনে গ্যাস উত্তোলনের সিদ্ধান্তের পিছনে। গুজরাত পেট্রোলিয়াম সংস্থার বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কংগ্রেস বরং তাদের জমানায় ব্যর্থ প্রকল্পগুলির হদিস নিক।

তবে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে যে ভাবে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটিকে নিরন্তর জিইয়ে রাখা। এবং এ ব্যাপারে কংগ্রেসকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে না দেওয়া। সে কারণে রাহুল গাঁধীর সহায়কের পারিবারিক সংস্থার বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) যেমন তদন্ত শুরু করে দিয়েছে, তেমনই কপ্টার-দুর্নীতি নিয়েও তদন্ত চলছে জোরকদমে। প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগীকে আজ দ্বিতীয় দফায় দিনভর জেরা করে সিবিআই। পরে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, জেরায় ত্যাগী কবুল করেছেন ইতালীয় সংস্থার সিওও-র সঙ্গে তিনি দিল্লিতে দেখা করেছিলেন।

আরও খবর...

মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়ে রাহুলকে চাইলেন প্রশান্ত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন