সব দায় মোদীর, চড়া সুর রাহুলের

রাফাল বিতর্কের পরেই নীরব মোদীর ঘটনায় দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়ার প্রতিশ্রুতি যে তছনছ হয়ে যাচ্ছে, বুঝতে পারছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ তিনি ‘নীরব’। নোটবন্দি থেকে জিএসটি-র সময়ে তাঁর ‘সঙ্কটমোচক’ অরুণ জেটলিও চুপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।

ব্যঙ্গের মোড়কে নরেন্দ্র মোদীকে খোঁচা দিয়ে যাচ্ছিলেন গোড়া থেকেই। আজ বিঁধলেন সাম্প্রতিক কালের সব চেয়ে চাঁছাছোলা আক্রমণে। রাহুল গাঁধী অভিযোগ করলেন, নীরব-কাণ্ডের দায় প্রধানমন্ত্রীরই। এ ব্যাপারে সবই জানত প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সরকারের উপর মহলের রক্ষাকবচ ছাড়া এমন ঘটনা সম্ভব ছিল না।

Advertisement

আজ দলীয় বৈঠকের পরে কংগ্রেস সভাপতি দাবি তোলেন, মুখ খুলতে হবে মোদীকে। দেশবাসীকে জানাতে হবে, কেন, কী ভাবে এমন ঘটল? বলতে হবে, এখন তিনি কী করবেন? রাহুল বলেন, ‘‘নোটবন্দিতে নরেন্দ্র মোদী সকলের পকেটের টাকা ব্যাঙ্কে জমা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এখন সেই ব্যাঙ্কের ২২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন নীরব মোদী। বাচ্চাদের পৌনে দু’ঘণ্টা ধরে পরীক্ষার পাঠ পড়াতে পারেন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু নিজের বন্ধু শিল্পপতিদের লুঠ নিয়ে কিছু বলছেন না। প্রধানমন্ত্রীই নষ্ট করছেন দেশের অর্থনীতিকে।’’

রাফাল বিতর্কের পরেই নীরব মোদীর ঘটনায় দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়ার প্রতিশ্রুতি যে তছনছ হয়ে যাচ্ছে, বুঝতে পারছেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ তিনি ‘নীরব’। নোটবন্দি থেকে জিএসটি-র সময়ে তাঁর ‘সঙ্কটমোচক’ অরুণ জেটলিও চুপ। বদলে যুক্তি দিতে আসছেন অন্য মন্ত্রীরা। আজ যেমন এলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই প্রসঙ্গেও রাহুল বলেছেন, ‘‘গোটা ঘটনার দায় যাঁদের, সেই প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এখনও চুপ। সামনে আসছেন শুধু সামাজিক ন্যায়, প্রতিরক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীরা।’’ সরকারি সূত্রের খবর, আজ রিয়াধ যাচ্ছেন জেটলি। ফিরবেন সোমবার। জালিয়াতির মোট অঙ্ক স্পষ্ট হলে তিনি সামনে আসবেন।

Advertisement

গত চার দিন ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধ চললেও ঘরোয়া মহলে বিজেপি নেতৃত্ব কবুল করছেন, হারা লড়াই জেতার চেষ্টা করছেন তাঁরা। আর দলের বৈঠকে রাহুল বলেছেন, মোদী জমানায় এই প্রথম একটি জুতসই দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। সংসদে শোরগোল তো হবেই, পথে নেমেও প্রচার করতে হবে। সব বিরোধী দল মিলে সংসদের যৌথ তদন্ত কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব এসেছে। আজ বৈঠকে মোদী জমানার অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। পি চিদম্বরম বলেছেন, ‘‘প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী হিসেবে জানি, ওপর থেকে ফোন না গেলে এমন ঘটনা হয় না।’’

এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল দিল্লিতে দলের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন মোদী। পূজাপাঠের পরে বক্তৃতাও দেওয়ার কথা। কিন্তু বিজেপি সূত্র বলছে, নীরব নিয়ে দলের অন্দরেও জোরালো হচ্ছে অসন্তোষ। প্রশ্ন উঠছে, এ ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা অনেকাংশেই ডেকে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। তিনিই বিরোধীদের নিশানা। দল কেন
দায় নেবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন