সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে গিয়ে হত্যার হুমকির মুখোমুখি রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পরে হিন্দু এবং মুসলমান সংহতির সাফল্য ঘোষণা করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদীর হাতে নিহত হতে হয় তাঁকে। আজ রাহুল গাঁধী আবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে গিয়ে হত্যার হুমকির মুখোমুখি। কিছু দিন আগে রাহুলকে খুনের হুমকি দিয়ে ফোন ও চিঠি আসে পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর কাছে। কংগ্রেস প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে রাহুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বিশেষ আর্জি জানান।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের ঘটনার পরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোও দেশের বিভিন্ন ভিভিআইপি-র নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যওয়ারি সমীক্ষা করে। তাতে দেখা যাচ্ছে রাহুলের উপরে হামলার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি। রাহুল মানস সরোবরে গিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন মন্দিরেও যাচ্ছেন। তাই বেশ কিছু উগ্র হিন্দু সংগঠন রাহুল গাঁধীর জীবননাশের হুমকি দিয়ে বুলন্দশহরে পোস্টার দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দাবি, ‘‘ওই হুমকির সঙ্গে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবার বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা আসলে বিজেপির নামে কুৎসা ছড়ানোর ষড়যন্ত্র।’’ গোয়েন্দাদের দাবি, রাহুল গাঁধী ছাড়া যে সব নেতাদের উপরে হামলার সম্ভাবনা বেশি তাঁদের মধ্যে আছেন অখিলেশ যাদব এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর নামও আছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারের জন্য রাহুলকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচারে যেতে হবে। রাহুলের বাবা রাজীব গাঁধী ভোট প্রচারের সময়েই নিহত হন। ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যু হয় শিখ দেহরক্ষীদের হাতে। গোয়েন্দাদের দাবি, এখন রাহুল গাঁধীর প্রধান শত্রু হল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরাই। কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘বারবার এ দেশে হিন্দু উগ্রপন্থীরা হত্যা করেছে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে। গাঁধীহত্যার পরেও হিন্দু উগ্রপন্থীরা আরও বহু ঘটনায় জড়িত ছিল। তবে রাহুল ওই হুমকিতে ভয় পান না। এই পরিবার বারবার আত্মত্যাগ করেছে। ওই হুমকিতে রাহুলের জনসভা ও রাজ্যওয়ারি সফর কমবে না।’’
আরও পড়ুন: মহিলা সংরক্ষণ নিয়ে চাপের অঙ্ক রাহুলের
এর আগে আমদাবাদে পাথর ছুড়ে রাহুলের গাড়ির কাঁচ ভেঙে দিয়েছিল বিজেপি সমর্থকেরা। সেই ঘটনায় গ্রেফতারও হয়েছিল কিছু বিজেপি সমর্থক। তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, এসপিজি-র নিরাপত্তা বলয় থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এ ঘটনা ঘটল? সংসদে রাজনাথ জানান, রাহুল নিজেই অনেক সময়ে বিদেশে গিয়ে এসপিজি-র নিরাপত্তা নেন না। এতে এসপিজি-র অসুবিধে হয়। কংগ্রেস পাল্টা অভিযোগ করে, এসপিজি-র মাধ্যমে সরকার রাহুলের উপর নজরদারি করছে।
আরও পড়ুন: কাটা রেকর্ডের জবাব রাহুলের
টানাপড়েনের মধ্যেই ২০১৯ সালের ভোটের আগে রাহুলের উপরে হামলার সম্ভাবনা নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলেছে।