ভরা বক্তৃতার মধ্যে প্রশ্ন ছুঁড়লেন এক সাংবাদিক। রাহুল গাঁধী তার জবাবও দিলেন। দিয়েই বললেন, ‘‘বক্তৃতার মাঝে নরেন্দ্র মোদীকে এমন প্রশ্ন করে দেখান তো! বার করে দেবেন। এটাই তাঁর সঙ্গে আমাদের ফারাক।’’
রাহুল গাঁধীর দলিত সম্মেলন। যে দলিত-কাঁটা এখনও বিঁধে রয়েছে মোদীর গলায়। প্রায় এক মাস ধরে দলিত-অভিযান করছেন ক্ষত মেটাতে। রাহুল সেখানেই বিঁধে বললেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটি বিষয়েই আগ্রহ। কী করে তিনি ফের ক্ষমতায় ফিরবেন। দলিত নিগ্রহ হোক, ধর্ষণ হোক, দেশ জ্বলে যাক— মোদীজির চিন্তা শুধু নিজেকে নিয়েই। তাঁর হৃদয়ে বাকি কারও জায়গা নেই।’’
মোদী এক মাসের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। রাহুল টানা এক বছরের। বাবাসাহেব অম্বেডকরের এ বছরের জন্মদিন থেকে পরের বছরের জন্মদিন পর্যন্ত। গোটা দেশে ‘সংবিধান বাঁচাও’ অভিযান। সেখানেই মোদী সম্পর্কে রাহুলের ঝাঁঝ থেকে কংগ্রেসের দলিত কর্মীদের আওয়াজ উঠল, ‘নরেন্দ্র মোদী মুর্দাবাদ’। রাহুল থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘না, কাউকে মুর্দাবাদ বলবেন না। আমরা এখানেই আলাদা।’’
কিন্তু বিষয়ে শান দিলেন রাহুল। দলিত সম্পর্কে মোদীর মানসিকতা বোঝাতে তাঁর লেখা বইকেই উদ্ধৃত করলেন। যেখানে মোদী লিখেছেন, ‘বাল্মীকি সমাজ বর্জ্য পদার্থ মাথায় তোলেন পেটের দায়ে নয়, আধ্যাত্মিকতার কারণে।’ রাহুলের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর এই ভাবনার জন্যই দলিতরা আজ তাঁর ওপরে ক্ষুব্ধ। যেখানেই যান অম্বেডকরের মূর্তিতে মালা পরান, চোখের জল ফেলেন, কিন্তু পিছন থেকে দলিতদের দমন করেন। রাহুল বলেন, বিজেপি-আরএসএসকে সংবিধান ছুঁতে দেওয়া হবে না। এর পরেই রাহুলের চ্যালেঞ্জ, ‘‘দলিত নিগ্রহ, ধর্ষণ, নীরব মোদী, রাফাল নিয়ে আমাকে ১৫ মিনিট সংসদে বলতে দিলে প্রধানমন্ত্রী দাঁড়াতে পারবেন না। সে কারণে এই প্রথম সরকার নিজেরাই সংসদ স্তব্ধ করে দিয়েছে।’’
নানা বিষয়ে রাহুলের এই সাঁড়াশি আক্রমণ মোকাবিলায় অমিত শাহ আসরে নেমে বলেন, ‘‘সংবিধান নির্মাতা অম্বেডকরকেই দু’বার হারাতে চেয়েছিলেন নেহরু। ‘ভারতরত্ন’ও দেয়নি কংগ্রেস।’’ আর দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের মতে, ‘‘আসলে এগুলি রাহুল গাঁধী নয়, শাহজাদা বলছেন। পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তাই হজম হচ্ছে না। ‘সংবিধান বাঁচাও’ নয়, রাহুল নিজের রাজনৈতিক জীবন বাঁচাতে চাইছেন।’’