বক্তা: মঞ্চে তেজস্বী। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুল গাঁধীকেই চান বিহারের জোট-নেতারা। আজ পটনার গাঁধী ময়দানে কংগ্রেসের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে সে কথাই ঘোষণা করলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চার জিতনরাম মাঁঝি, শরদ যাদবেরা।
প্রায় তিন দশক পরে এই সভাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস কর্মীদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সেখানেই জোট নেতাদের এই ঘোষণায় কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা রীতিমতো চাঙ্গা হয়ে উঠলেন। এর আগে দক্ষিণ ভারতের বিজেপি-বিরোধী জোটের দুই নেতা—ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা এইচ ডি কুমারস্বামী রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে জোটের মুখ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। আজ বিহারের শরিক নেতারা সেই দাবিতেই ‘সিলমোহর’ লাগালেন।
এ দিনের সভায় তেজস্বী বলেন, “রাহুল গাঁধীই প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্য। কংগ্রেসই সবচেয়ে বড় দল। তাই শরিকদের সঙ্গে নিয়ে চলার দায়িত্বও কংগ্রেসেরই।’’ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে বিহারের অধিকার সুনিশ্চিত করতে রাহুল গাঁধী ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। কার্যত একই বক্তব্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝির। তিনি বলেন, “আমরা চাই রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রী হোন।” রাহুল গাঁধীকে আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার জন্য কংগ্রেস কর্মীদের আরও পরিশ্রম করার পরামর্শ দেন নীতীশের সঙ্গ ছেড়ে আসা নেতা শরদ যাদব।
নিজের ভাষণে বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থার ভয়ঙ্কর ছবি তুলে ধরেন রাহুল। চার-পাঁচ বছর ধরে রাজ্যের ছাত্ররা শংসাপত্র পান না বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, “আমি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিই না। ক্ষমতায় এলে পটনা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করা হবে।” বছর দেড়েক আগে পটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে পটনা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু তা এড়িয়ে যান মোদী। এ দিন, এ কথা ঘোষণা করে মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানালেন রাহুল।
একক ক্ষমতায় বিহার প্রদেশ কংগ্রেস এ দিনের সভার আয়োজন করেছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে মূল্যায়ন করাই ছিল এর লক্ষ্য। দলের ২৭ জন বিধায়কের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার করে লোক আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, মোকামার বিধায়ক, বিহারের বাহুবলী নির্দল নেতা অনন্ত সিংহ হাজার পঞ্চাশে লোক আনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। গাঁধী ময়দানের বড় অংশটাই ভরিয়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। যদিও বিজেপি রাজ্য সভাপতি নিত্যানন্দ রায়ের বক্তব্য, “এই সভা আসলে সুপারফ্লপ এক নেতার ফ্লপ শো।”