কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
ভোটচুরি’ নিয়ে আবার সরব হলেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করে নিজের অভিযোগের ‘প্রমাণ’ দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ভোর ৪টের সময় দু’টি নাম বাদ দেওয়া হয়েছে ভোটার তালিকা থেকে! কেউ এক জন মাত্র ৩৬ সেকেন্ডের মধ্যে এই কাণ্ড ঘটান বলে অভিযোগ করেন রাহুল।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠান থেকে ‘ভোটচুরি’র একের পর এক অভিযোগ করেন রাহুল। সেই অনুষ্ঠানের একটি ছোট্ট ভিডিয়ো শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন তিনি। কটাক্ষের সুরে রাহুলের দাবি, ‘‘ভোর ৪টেয় ঘুম থেকে উঠুন, ৩৬ সেকেন্ডের মধ্যে দু’জন ভোটারের নাম বাদ দিন, আবার ঘুমিয়ে পড়ুন— এ ভাবেই ভোটচুরির ঘটনা ঘটে।’’ কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, নির্বাচনী নজরদারেরা চুরির দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন এবং চোরেদের রক্ষা করেছেন!
বৃহস্পতিবার রাহুল অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় ভাবে সফ্টঅয়্যার ব্যবহার করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তাঁর কথায়, “অলন্দ কর্নাটকের একটি লোকসভা কেন্দ্র। কেউ কেউ ৬০১৮টি ভোট মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন। আমরা জানি না ২০২৩ সালের ভোটে (কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচন) ঠিক কত জনের নাম বাদ গিয়েছে। কিন্তু সংখ্যাটা অবশ্যই ৬০১৮-র বেশি হবে।” মঞ্চের পিছনে থাকা স্ক্রিনে কয়েকটি ফোন নম্বর তুলে ধরে রাহুল দাবি করেন, বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফর্ম পূরণ করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে ওই নম্বরগুলি থেকে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) দেওয়া সম্ভব হল, সেই প্রশ্ন তোলেন রাহুল।
শুধু ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ নয়, কী ভাবে প্রতিকার সম্ভব, তা-ও জানিয়েছেন রাহুল। শুক্রবার আরও একটি পোস্টে কংগ্রেস নেতা দাবি করেন, ‘ভোটচুরি’ রুখতে এগিয়ে আসতে হবে ভারতের তরুণ প্রজন্মকে (জেন-জ়ি)। রাহুলের আশা, গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারেন একমাত্র তাঁরাই। কংগ্রেস নেতার পোস্ট, ‘‘দেশের যুবসমাজ, ছাত্রছাত্রী এবং জেন-জ়িরাই সংবিধান রক্ষা করবেন, গণতন্ত্র রক্ষা করবেন এবং ভোটচুরি বন্ধ করবেন। আমি সর্বদা তাঁদের পাশে থাকব।’’
বৃহস্পতিবারই রাহুলের ‘ভোটচুরি’র অভিযোগের জবাব দেয় নির্বাচন কমিশন। রাহুলের অভিযোগকে ‘ভুল এবং ভিত্তিহীন’ বলে খারিজ করে দেয় তারা। তাদের বক্তব্য, অনলাইনে কেউ কোনও ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। কারও নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয় বলেও জানায় কমিশন। তবে কমিশন এ-ও জানায়, কর্নাটকের যে বিধানসভা কেন্দ্রের কথা রাহুল বলেছন, সেখানে ২০২৩ সালে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়। তবে সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।
রাহুলের নতুন অভিযোগ নিয়ে আসরে নেমেছে বিজেপি। সাংসদ নিশিকান্ত দুবের দাবি, পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় ভাবে দাঁডিয়েছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর দাবি, রাহুল গান্ধী মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন যে, তাঁর নেতৃত্বে কংগ্রেস ‘ব্যর্থ’ হয়েছে। একাধিক নির্বাচনে হারতে হয়েছে হাত শিবিরকে। ভারতের তরুণ প্রজন্ম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছে। রিজিজুর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের পরাজয়ের পর রাহুল গান্ধী ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অপব্যবহার করছেন। তাঁর মতো লোকেরা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইঞ্জিনকে থামিয়ে দিতে চান। কেউ তাঁদের বিশ্বাস করেন না।’’