প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা-মায়াকেও মানতে রাজি রাহুল

বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা মায়াবতীর মতো কাউকে মেনে নিতেও দলের আপত্তি নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা মায়াবতীর মতো কাউকে মেনে নিতেও দলের আপত্তি নেই। —ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গাঁধীর নাম ঘোষণা করে দল যে বিরোধী শিবিরে আগেভাগে কোনও অস্বস্তি তৈরি করতে নারাজ, তা গত কালই স্পষ্ট করেছিল কংগ্রেস। আজ এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ সূত্রে বলা হল, বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা মায়াবতীর মতো কাউকে মেনে নিতেও দলের আপত্তি নেই।

Advertisement

গত রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দাবি উঠেছিল, বিরোধী জোটে রাহুলকে মধ্যমণি করে তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা হোক। পরে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাহুলই কংগ্রেসের মুখ। এর পরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া প্রকাশ্যেই সমর্থন করেছিলেন রাহুলকে। কিন্তু লালু-পুত্র তেজস্বী অন্য পথে হেঁটে বলে দেন, বিরোধী জোটে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার অনেকে। প্রধানমন্ত্রী পদে মমতাকে বসানো নিয়ে জল্পনা রয়েছে অনেক দিন ধরেই। মায়াবতীও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য সক্রিয়। আজ কংগ্রেসকে কার্যত সতর্কবার্তা দিয়ে দলিত নেত্রী বলেছেন, আসন বণ্টন ঠিক মতো না হলে জোট হবে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আজ ঘনিষ্ঠ মহলে রাহুলের বার্তা, বিজেপিকে রুখতে তিনি নমনীয় হতে রাজি।

কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রের মতে, রাহুল মনে করেন, প্রধানমন্ত্রিত্বের থেকেও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হল বিজেপিকে হারানো। মমতা সম্পর্কে তাঁর মত, তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেস থেকে এসেছেন। ফলে আরএসএসের সঙ্গে তিনি থাকবেন না। পশ্চিমবঙ্গে জোট নিয়ে জটও কেটে যাবে। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, ভোটের পরে বড় দল হিসেবে কংগ্রেস উঠে এলে অঙ্কের হিসেবেই জোটের প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুল। এবং সেটা ঠিক হবে ভোটের ফলপ্রকাশের পরে। যে কারণে আজ শরদ পওয়ারের তরফেও বলা হয়, মানুষ রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিলে এনসিপি বিরোধিতা করবে কেন?

Advertisement

মোদীকে হারানোর অঙ্ক কষে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে চিদম্বরম জানিয়েছিলেন, ১২টি রাজ্যে কংগ্রেস নিজেদের শক্তিতেই শ’দেড়েক আসন পেতে পারে। আর বাকি রাজ্যে শরিকদের সঙ্গে মিলে আরও দেড়শো। রাহুল মনে করেন, উত্তরপ্রদেশ আর বিহারে বিরোধীদের সার্বিক জোট প্রায় হয়েই গিয়েছে। জোটের কাছে কোণঠাসা বিজেপি ওই দুই রাজ্যে তলানিতে ঠেকবে। সব মিলিয়ে গোটা দেশে কোনও অবস্থাতেই ২০০-র কোঠা পেরোতে পারবে না তারা। তবে সেই সঙ্গেই রাহুলের হিসেব, কোনও ভাবে ২২০-২৪০টি আসন জোগাড় করতে পারলে অবশ্য বিজেপি ফের সরকার গড়ার পথে যাবে।

রাহুল মনে করেন, বিজেপির আসন ২২০তে নেমে গেলেই মোদীর পক্ষে আর প্রধানমন্ত্রী হওয়া কঠিন। কারণ তখন সঙ্ঘ এবং বিজেপির একাংশই তাঁকে চেপে ধরবেন। সে কারণেই মোদী-অমিত শাহরা এখন এত আক্রমণাত্মক। সে কারণে তাঁদের হারাতে দরকার একটি মসৃণ বিজেপি-বিরোধী জোট। সেটাই এখন সব চেয়ে বড় চিন্তা রাহুলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন