Rahul Gandhi

‘মোদীর ভুলেই দুর্বল হয়েছে দেশ, লাদাখে মাথা তুলতে পেরেছে চিন’, বললেন রাহুল

টুইটারে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিয়োতে মোদী সরকারের দিকে প্রশ্নের তির ছুড়েছেন রাহুল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ১৭:৫৮
Share:

ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাহুল গাঁধী। ছবি: সংগৃহীত।

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (অ্যাকচুয়াল লাইন অব কন্ট্রোল বা এলএসি) বরাবর চিনা আগ্রাসনের জন্য কার্যত নরেন্দ্র মোদী সরকারকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাহুল গাঁধী। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের মতে, গত ছ’বছরে মোদী সরকারের ধারাবাহিক ভুল এবং হঠকারিতার জন্যই ভারত দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার ফলে ভারতের মতো দেশের বিরুদ্ধে মাথা তুলতে পেরেছে চিন। নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করে রাহুলের দাবি, মোদী সরকারের ভ্রান্ত বিদেশনীতির জন্যই পড়শি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর দুর্বলতা। এ সব কারণেই লাদাখে আগ্রাসী হওয়ার সাহস দেখিয়েছে চিন।

গত মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা আগ্রাসনের পর থেকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত জোরালো আক্রমণ করেছেন রাহুল। শুক্রবারও তা অব্যাহত রেখেছেন তিনি। টুইটারে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিয়োতে মোদী সরকারের দিকে প্রশ্নের তির ছুড়েছেন রাহুল। তাতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিদেশ নীতি-সহ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জন্য কার্যত মোদী সরকারকেই দায়ী করেছেন তিনি। ৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োতে রাহুলের প্রশ্ন, “ভারতে কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যাতে চিন এমন আগ্রাসী কাজ করতে পারে? এই মুহূর্তে কী এমন হয়েছে, যা ভারতের মতো দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চিনাদের আস্থার যোগান দিয়েছে?”

মোদী সরকারের দিকে প্রশ্নমালা ছুড়ে দিলেও উত্তরের অপেক্ষা করেননি রাহুল। নিজেই সে উত্তরগুলো বলে দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদীর দিকে যাবতীয় দায় ঠেলে দিয়ে রাহুলের উত্তর, “২০১৪ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ধারাবাহিক ভুল সিদ্ধান্ত এবং হঠকারিতা ভারতকে মৌলিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। যা আমাদের অসুরক্ষিত করে দিয়েছে।” সেই সঙ্গে মোদীর নামোল্লেখ না করে রাহুলের পর্যবেক্ষণ, “বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বিশ্বে ফাঁকা বুলি আর যথেষ্ট নয়!”

Advertisement

গত মাসে পূর্ব লাদাখে এলএসি বরাবর চিনা আগ্রাসনের বলি হয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক কর্নেল-সহ ২০ জওয়ান। ভারত-চিন সংঘর্ষের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী তথা তাঁর সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করেছেন রাহুল। এ দিন সেই আক্রমণের সুর আরও এক পর্দা চড়িয়ে রাহুল বলেন, “বিদেশনীতির মাধ্যমে একটি দেশ সুরক্ষিত থাকে, প্রতিবেশীদের দ্বারাও সেই সুরক্ষা মেলে, অর্থনৈতিক দিক থেকেও মজবুত থাকার রসদ পাওয়া যায়, নাগরিকদের অনুভূতি এবং দূরদর্শিতার মধ্যে দিয়েও সুরক্ষিত থাকা যায়। কিন্তু গত ছ’বছরে কী হয়েছে.... এই সমস্ত দিকেই ভারত বির্পযস্ত হয়েছে।”

আরও পড়ুন: এক ইঞ্চি জমিও কেউ নিতে পারবে না, লাদাখে বললেন রাজনাথ

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজস্থান নিয়ে নাটক চরমে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর​

রাহুলের মতে, অন্য দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কে ‘লেনদেন’-এ পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি তার জন্য দায়ী মোদী সরকারের বিদেশনীতি। তাঁর কথায়, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের লেনদেনের সম্পর্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে বিঘ্ন ঘটিয়েছি। আমরা ইউরোপের সঙ্গেও লেনদেনের সম্পর্ক স্থাপন করেছি।”

গত ছ’বছরে ভ্রান্ত বিদেশনীতি ছাড়াও বন্ধু প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিও ঘটেছে বলে মনে করেন রাহুল। তিনি বলেন, “আগে নেপাল আমাদের বন্ধু ছিল। ভুটান আমাদের বন্ধু ছিল। শ্রীলঙ্কা আমাদের বন্ধু ছিল। পাকিস্তান ছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলি আমাদের সঙ্গে যৌথ ভাবে চলার কথা ভাবত। আজ, নেপাল আমাদের উপর ক্ষুব্ধ। নেপালে গেলে, সেখানকার মানুষজনের সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে গেলে বোঝা যায়, যা হচ্ছে, তাতে নেপাল আমাদের উপর ক্ষুব্ধ। শ্রীলঙ্কা একটি বন্দর চিনকে ব্যবহার করতে দিয়েছে… ফলে আমরা আমাদের বিদেশি অংশীদারদের ক্ষিপ্ত করে তুলেছি।”

মোদী সরকারের বিদেশনীতির তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক দুবর্লতা নিয়েও মুখ খুলেছেন রাহুল। তাঁর দাবি, কংগ্রেসের বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যাপ্ত নজর দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে তার দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ সমস্ত কারণই চিনা আগ্রাসনে রসদ জুগিয়েছে বলে মত রাহুলের। তাঁর কথায়, “সুতরাং, বর্তমানে আমাদের দেশ অর্থনৈতিক ভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে, বিদেশনীতির বিষয়ে যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে, প্রতিবেশীদের নিয়েও বেকায়দায় পড়েছে। এ সব কারণেই চিন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে, এটাই সম্ভবত মাথা তোলার সঠিক সময়। এবং সে জন্যই তারা আগ্রাসী হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন