তখন তোলপাড় চলছে লোকসভায়। ছবি: পিটিআই।
গুজরাতে দলিত নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে তাঁর দলের সব সাংসদ যখন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তুমুল হট্টগোল করছেন, তিনি তখন চোখ বুজে বসে! শোরগোলের মধ্যেই লোকসভা টিভির ক্যামেরায় আজ ধরা পড়ে, কংগ্রেসের সাংসদরা দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছেন, আর রাহুল গাঁধী নিজের আসনে হেলান দিয়ে বসে। কপালে ডান হাত ঠেকিয়ে মাথাটা ভর দিয়ে রেখেছেন । দু’চোখ বোজা। বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করেন, রাহুল ঘুমোচ্ছিলেন। টুইটার-সোশ্যাল মিডিয়াতেও কটাক্ষ, টিপ্পনি শুরু হয়ে যায়। বেজায় বিড়ম্বনায় পড়ে কংগ্রেসের নেতারা দাবি করেন, মোটেই ঘুমোচ্ছিলেন না দলের সহ-সভাপতি। ওই হট্টগোলের মধ্যে ঘুমোনো সম্ভব নয়। তিনি মোবাইলে মেসেজ দেখছিলেন। কেউ আবার বলেন, বিশ্রাম দিচ্ছিলেন চোখ দু’টিকে!
বিজেপি নেতারা অবশ্য সেই ব্যাখ্যা মেনে নিতে নারাজ। কংগ্রেস সত্যিই কতখানি দলিত-নির্যাতন নিয়ে চিন্তিত, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রাহুল নিজে কিন্তু এ সব নিয়ে একটি কথাও বলেননি। কাল তিনি উনায় যাবেন বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে।
এর আগে রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার পরেই মোদী সরকারকে দলিত-বিরোধী হিসেবে প্রচার করেছে কংগ্রেস। আজ বিরোধীদের হট্টগোলে ছ’বার রাজ্যসভা মুলতুবি করতে হয়। কংগ্রেস ও তৃণমূল ওয়াক-আউট করে। দলিত নির্যাতনের ঘটনায় আজ একই সঙ্গে বিজেপি ও কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন মায়াবতী। এমনিতেই বিজেপির এক নেতা মায়াবতী সম্পর্কে কুমন্তব্য করায় তাদের কড়া সমালোচনা করেন বিএসপি নেত্রী। ছাড় দেননি রাহুলকেও। সংসদে ‘ঘুমিয়ে পড়া’র জন্য তাঁকে নিশানা করে মায়াবতী বলেন, ‘‘এ থেকেই ওঁদের মনোভাব স্পষ্ট। দু’দিন আগেই রাজ্যসভায় এই বিষয়টি তুলতে চেয়েছিলাম। কংগ্রেস তখন তাতে গুরুত্ব দেয়নি।’’
সংসদের উভয় কক্ষে গুজরাতে দলিত নির্যাতন নিয়ে দফায় দফায় বিরোধিতায় মুখর হয় তৃণমূলও। রাত পোহালেই কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান, কিন্তু তৃণমূল নেত্রী কার্যত রিমোট কন্ট্রোলে আজ সংসদে কেন্দ্র বিরোধিতার নকশা নিয়ন্ত্রণ করে গেলেন। এ দিন তাঁর নির্দেশে লোকসভায় একাধিক বার ওয়াক আউট করেন দলের সাংসদরা। রাজ্যসভায় দলিত নির্যাতন নিয়ে পুরোদস্তুর আলোচনার নোটিসও দিয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। আগামিকাল সেই আলোচনার দিন ধার্য হয়েছে।
তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা বিরোধিতা করেছি সম্পূর্ণ নিজেদের জায়গা থেকে। অন্য দলের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয়ের মাধ্যমে নয়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ এসেছিল, একসঙ্গে বিক্ষোভ দেখানো ও প্রয়োজনে ওয়েলে যাওয়ার জন্য। এর কোনওটাই করিনি।’’