রাহুল গাঁধী।
মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের দিকে আঙুল তুলে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাহুল গাঁধী। আর, এ দিনই রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির পাল্টা, ‘‘দেশের নতুন অর্থনৈতিক ইতিহাস তৈরির জন্যই ভবিষ্যতে মানুষ এই সরকারকে মনে রাখবে।’’
কংগ্রেস সভাপতি বৃহস্পতিবার টুইট করেন, ‘‘কতটা এগোল ‘ফেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি, তা সকলে এক ঝলক দেখে নিন।’’ এই বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পকে কটাক্ষ করে অর্থনীতি নিয়ে সাম্প্রতিক কিছু পরিসংখ্যানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
নোটবন্দি, তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করা নিয়ে কেন্দ্রকে দীর্ঘ দিন ধরেই বিঁধছেন অর্থনীতিবিদরা। এ দিন ফের সমালোচনা করলেন রাহুলও। মেক ইন ইন্ডিয়া নিয়ে ঢাকঢোল পেটালেও অর্থনীতির চাকা যে কার্যত থমকে, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)-র পরিসংখ্যান তুলে ধরে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন রাহুল। তাঁর দাখিল করা বিভিন্ন তথ্যের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে নতুন লগ্নি ২০১৭-র অক্টোবর-ডিসেম্বরে ১৩ বছরে সবচেয়ে নীচে নামার প্রসঙ্গ।
রাহুল গাঁধীর টুইট বার্তা ছাড়াও সাধারণ ভাবে বিরোধী দলের সদস্যরা রাজ্যসভায় এ দিন অর্থনীতি নিয়ে আলোচনায় অভিযোগ আনেন যে, বেকারত্ব বাড়ছে। সব মাপকাঠিতেই অর্থনীতি গত সাড়ে তিন বছরে নীচে নেমেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। জবাবে সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়ে জেটলির দাবি, ‘‘আমরা যে সব ব্যবস্থা নিয়েছি, আপাতত তার মূল্য চোকাতে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদে সুফল নজরে আসবেই।’’ তিনি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মূলধন জোগানো ও জিএসটি চালু করার কথা উল্লেখ করেন।
তবে যে পরিসংখ্যান রাহুল তুলে ধরেছেন, সেই অনুযায়ী অক্টোবর-ডিসেম্বরে নতুন লগ্নি নেমেছে ৭৭ হাজার কোটি টাকায়। আগের তিন মাসের তুলনায় কমেছে ৩৩%। কারখানার উৎপাদনের ছবিই সবচেয়ে মলিন। আবাসন, নির্মাণ শিল্পে নতুন প্রকল্পের ঘোষণা তলানিতে।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে এই সব পরিসংখ্যানকেই হাতিয়ার করেছেন রাহুল। মেক ইন ইন্ডিয়ার আড়ালে তাই তাঁর মতে মাথা চাড়া দিচ্ছে ‘ফেক ইন ইন্ডিয়া’। জেটলির অবশ্য দাবি, ‘‘এ দেশের বৈশিষ্ট্য হল, বৃদ্ধি ৭-৮% হলেও মানুষ সন্তুষ্ট নন। তাঁরা আরও বেশি দেখতে চান। এটা ভাল লক্ষণ!’’