রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে রাহুল গাঁধীকে সামনে রেখে এককাট্টা বিরোধীদের জোট নরেন্দ্র মোদীর প্রধান দুশ্চিন্তা। আর তাই গত কাল রাতে লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই জোটেই ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাহুল আজ পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বার্তা দিলেন, তিনি তাঁর ভালবাসা দিয়েই জোট ধরে রাখতে চান। দেশ গড়তে চান ভালবাসা দিয়েই।
মোদীকে আক্রমণ করে রাহুলের অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের কয়েক জনের মধ্যে ভয়, ঘৃণা ও বিদ্বেষকে হাতিয়ার করে নিজের যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করেছেন। সংসদে গত কালের বিতর্কের এটাই নির্যাস।’’ বাস্তবেই গত রাতে এই কৌশলই নিয়েছিলেন মোদী। মোদী চোখে চোখ রেখে কথাই বলতে পারেন না— কিছু দিন আগে মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ককেই তার জবাব দেওয়ার জন্য বেছে নেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, নেহরু-গাঁধী পরিবারের চোখে চোখ রাখার ফল দেশ দেখেছে। এই পরিবার সুভাষচন্দ্র বসু থেকে সর্দার বল্লভভাই পটেল, চৌধরী চরণ সিংহ থেকে মোরারজি দেশাই, এইচ ডি দেবগৌড়া থেকে চন্দ্রশেখর, প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে শরদ পওয়ার— সকলের সঙ্গে অবিচার করেছে। মোদীর এই দাবির কড়া সমালোচনা করেছেন রাহুল।
মোদী অবশ্য বুঝিয়েছেন, নিজের অস্ত্রে শান দিয়েই যাবেন তিনি। আজ উত্তরপ্রদেশে এক জনসভাতেও একই কৌশল নিয়ে মোদী বলেন, ‘‘এক দল আর এক দলের সঙ্গে জুড়ছে। মোদীকে হটানোর একমাত্র লক্ষ্যে এতগুলি দল মিলে ‘দলদল’ বা পাঁক তৈরি হচ্ছে। তাতে পদ্মফুলই ফুটবে।
রাজনীতির লোকজন বলছেন, আসলে কর্নাটকে বিজেপিকে আটকে দিয়ে এইচ ডি কুমারস্বামীর শপথ মঞ্চে সনিয়া গাঁধী, রাহুল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, অখিলেশ যাদবদের উপস্থিতি, গোটা বিরোধী শিবিরের এই এককাট্টা ছবিটাই মোদীর সামনে কাঁটার মতো বিঁধছে। ২০১৯-এর আগে সেই জোটে ফাটল ধরাতে তৎপর তিনি। গাঁধী পরিবারের সঙ্গে চরণ, দেবগৌড়া, পওয়ারদের পুরনো বিবাদ উস্কে দিয়ে তাঁদের উত্তরসূরিদের সঙ্গে রাহুলের বিবাদ তৈরির চেষ্টা করছেন তাই। রাহুলের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘আমরা প্রমাণ করব, দেশের মানুষের মনে ভালবাসা ও অনুকম্পা ছড়িয়ে দেওয়াই দেশ গড়ার একমাত্রা রাস্তা।’’