ছবি: পিটিআই।
মাত্র তিন মাসের লড়াইয়ে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে বিধানসভায় বিজেপিকে দুই অঙ্কে নামিয়ে এনেছেন রাহুল গাঁধী। দেড় বছর পরে লোকসভার লড়াই। তাতে গুজরাত থেকে বিজেপির লোকসভা সদস্যের সংখ্যা এক অঙ্কে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝাঁপাবে তাঁর দল।
কংগ্রেসের সূত্রের বক্তব্য, গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, মোদীর রাজ্যে বিজেপিকে ধরাশায়ী করা সম্ভব। এ বারে বিধানসভায় যে ফল হয়েছে, তার ভিত্তিতে এখনই লোকসভা নির্বাচন হলে ১০টির মতো আসন জিততে পারে কংগ্রেস। এটি রাহুলের মাত্র তিন মাসের প্রচারের ফল। নির্দল হিসেবে জিতে কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন এক বিধায়ক। ফলে গুজরাত কংগ্রেস যদি এখন থেকেই জোরদার ভাবে মাঠে নামে, তা হলে ২০১৯-এর ভোটে সংখ্যাটি অনায়াসে দ্বিগুণ করা সম্ভব। এ রাজ্যে লোকসভা কেন্দ্র মোট ২৬টি। তার মধ্যে ২০টি কংগ্রেস দখল করে নিলে বিজেপির শক্তি এক অঙ্কে নেমে আসবে।
কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর কাছে গুজরাত সব সময়েই মর্যাদার লড়াই। দলের ওই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কংগ্রেস এগোলে লোকসভা ভোটের সময়ে মোদীকে নিজের রাজ্যেই অনেকটা আটকে রাখা সম্ভব হবে।’’
গত কালই গুজরাতে গিয়ে রাহুল কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের খোলাখুলি জানিয়েছেন, আসল বিষয়টি হল, এটা ভাবতে শেখা যে, মোদীকে হারানো সম্ভব। পরের বিধানসভায় ১৩৫টি আসন জেতার লক্ষ্য রেখে সরকার গড়ার কথাও প্রকাশ্যে জানিয়ে এসেছেন রাহুল। কিন্তু তার আগে এখন থেকেই পুরোদস্তুর এক সক্রিয় বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের মন্ত্রও কানে পুরে দিয়েছেন কংগ্রেসের নতুন সভাপতি।
কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, গুজরাতে এখনও নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেননি। কিন্তু ভোট শেষ হতেই রাজ্যে বাদামের সহায়ক মূল্য কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। নর্মদার জলের পরিমাণ কমানো হয়েছে। অস্থায়ী শিক্ষকদের ছাঁটাই করার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের কাজ, মানুষের এই অসন্তোষকে পুঁজি করে নিরন্তর তাদের পাশে দাঁড়ানো। আর লাগাতার লড়াইটা করে যাওয়া। রাহুলের প্রচারে সাড়া দিয়ে গুজরাতের গ্রাম যে ভাবে কংগ্রেসকে দরাজ হাতে ভোট দিয়েছে, তাতেই স্পষ্ট, মোদীর রাজ্য বদল চাইছে। দরকার এক শক্ত বিকল্পের।
পি চিদম্বরম আজ বলেন, ‘‘দিল্লি ও বিহারেও দেখা গিয়েছিল, গুজরাতেও প্রমাণ হল মোদী আদৌ অপ্রতিরোধ্য নন।’’ গুজরাতের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌতের কথায়, ‘‘গুজরাতে লোকসভা ভোটের নকশা আমরা তৈরি করছি। ইন্দিরা গাঁধীর সময়ে যে রকম উৎসাহ দেখা গিয়েছিল, সে রকমই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে রাহুলকে ঘিরে।’’ কংগ্রেসের সহযোগী হার্দিক পটেলও বড়সড় আন্দোলনে নামছেন। গহলৌত জানান, বিজেপিকে হারানোর জন্য বিধানসভায় যাঁরা সঙ্গ দিয়েছিলেন, লোকসভাতেও তাঁরা সঙ্গে থাকবেন।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কাল অমদাবাদ যাচ্ছেন। পরশু বিজয় রূপাণী সরকারের শপথের আগে নিজের হাতে তিনি তৈরি করবেন মন্ত্রীদের তালিকা।