রাম ঠেকাতে বাম সহায়, যাচ্ছেন রাহুল

এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও মানিক সরকারের রাজ্যে দৌড়়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেসের সেখানে প্রায় চালচুলো নেই! কিন্তু সেই ত্রিপুরাতেও প্রচারের শেষ লগ্নে দেখা যাবে রাহুল গাঁধীকে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩২
Share:

রাহুল গাঁধী।

বাংলায় তিনি ছিলেন বামেদের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে। আর এক বাঙালি রাজ্যে এ বার তিনি যাচ্ছেন বাম-বিরোধী প্রচারে!

Advertisement

ত্রিপুরায় এ বার বিধানসভা ভোটে প্রায় রাজনৈতিক মেরুকরণের আবহ। লড়াই সরাসরি সিপিএমের সঙ্গে বিজেপি-র। উত্তর-পূর্বে অসম, মণিপুর, অরুণাচলে সরকার গড়ে ফেলার পরে বাম-শাসিত ত্রিপুরা দখল করতে মরিয়া হয়েছে গেরুয়া শিবির। যার জন্য এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও মানিক সরকারের রাজ্যে দৌড়়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেসের সেখানে প্রায় চালচুলো নেই! কিন্তু সেই ত্রিপুরাতেও প্রচারের শেষ লগ্নে দেখা যাবে রাহুল গাঁধীকে।

কংগ্রেস-শাসিত মেঘালয়ে মন দিলেও ত্রিপুরায় রাহুলের কোনও সফরের পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু এখন ঠিক হয়েছে, প্রচারের শেষ দিনে, ১৬ ফেব্রুয়ারি কৈলাশহরে যাবেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহের কেন্দ্রে সমাবেশ করার কথা তাঁর। সেই সঙ্গে আগরতলায় রোড-শো।

Advertisement

প্রশ্ন হচ্ছে, সিপিএম বনাম বিজেপি-র লড়াইয়ের ময়দানে কংগ্রেসের সম্ভাবনা ক্ষীণ জেনেও রাহুল ত্রিপুরায় সময় দিচ্ছেন কেন? বাম সূত্রের খবর, সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের যে অংশ কংগ্রেসের প্রতি সহানুভূতিশীল, তাঁরাই চেয়েছিলেন মেঘালয়ের ফাঁকে ত্রিপুরাতেও যান রাহুল। তিনি গেলে কংগ্রেসের চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্কে সামান্য হলেও উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। তাতে বাম-বিরোধী ভোটে ভাগাভাগির সম্ভাবনা বাড়ে। সেই মর্মে বার্তা পৌঁছেছিল এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে। রাহুলের দূত হয়ে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সি পি জোশীও ত্রিপুরার দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন আগরতলায়।

কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে সব রাজ্যে সংগঠনকে গতিশীল করাই দলের সভাপতির লক্ষ্য। ত্রিপুরায় তৃণমূলের জোটের প্রস্তাব কংগ্রেস ফিরিয়ে দিয়েছে রাহুলের পরামর্শেই। কঠিন পরিস্থিতিতে দলের কর্মীরা যে লড়াই করছেন, তাতে উৎসাহ জোগাতেই রাহুল ত্রিপুরায় যাবেন। ত্রিপুরায় ভোট-প্রক্রিয়ায় থাকা কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘এখানে এলে রাহুলকে তো সিপিএম সরকারের বিরুদ্ধে বলতেই হবে। তার জন্য বিশেষ কোনও কারণ নেই। আর একই সঙ্গে বিজেপি-র বিপদের বিরুদ্ধেও উনি সরব হবেন।’’

সিপিএম নেতৃত্ব আবার প্রকাশ্যে ভাবলেশহীন থাকলেও ভিতরে ভিতরে রাহুলকে স্বাগতই জানাচ্ছেন! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বেশির ভাগ আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী আছেন। তাঁরা কিছু শতাংশ করে ভোট কাটলেও এই পরিস্থিতিতে আমাদের মঙ্গল!’’

শত্রুতাও এখন আসলে মিত্রতার মোড়ক!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন