ছুটিতে রাহুল, হাল ধরেছেন প্রিয়ঙ্কাই

দাদা ছুটিতে। মায়ের সঙ্গে ভোটের কৌশল স্থির করছেন বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ০৩:৫৬
Share:

দাদা ছুটিতে। মায়ের সঙ্গে ভোটের কৌশল স্থির করছেন বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।

Advertisement

জন্মদিনের পরের সকালে টুইট করে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী জানিয়েছিলেন, তিনি ফের বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। তবে এ বারের অবকাশ ‘ছোট’। কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে, অজ্ঞাতবাস থেকে রাহুল ফিরেছেন কি না, তার কোনও খবর নেই। বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অবশ্য দাবি করেছেন, এক ‘বিশেষ বন্ধু’র সঙ্গে রাহুল এখন লন্ডনে। এই অবস্থায় উত্তরপ্রদেশের ভোট কৌশল ঠিক করতে রাশ তুলে নিয়েছেন সনিয়া গাঁধী। তাতে প্রিয়ঙ্কাকেও সামিল করছেন তিনি।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন দশ জনপথে। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রিয়ঙ্কা বঢরাও। প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে আলাদা ভাবেও আলোচনা হয়েছে আজাদের। আসন্ন ভোটে দলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের আরও দুই নেতা পি এল পুনিয়া ও প্রমোদ তিওয়ারির সঙ্গেও প্রিয়ঙ্কার কথা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রিয়ঙ্কা গোটা রাজ্যেই প্রচার করবেন। এত দিন দাদা ও মায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র অমেঠী ও রায়বরেলীতেই তিনি প্রচার করতেন। এ বার সেই গণ্ডি পেরিয়ে গোটা রাজ্যেই তাঁকে দিয়ে প্রচার করাতে চায় দল। তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা।

Advertisement

এই মুহূর্তে দলের সামনে বড় প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশে কাকে মুখ করে এগোনো হবে। কংগ্রেসের প্রচার-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর চেয়েছিলেন রাহুল বা প্রিয়ঙ্কাকে। কিন্তু গাঁধী পরিবার সে প্রস্তাব সটান খারিজ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার রাহুলকে বা দলের ‘শেষ তাস’ প্রিয়ঙ্কাকে কোনও অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ করতে রাজি হয়নি গাঁধী পরিবার। বিশেষ করে দলের ভিতই তেমন শক্ত নয় উত্তরপ্রদেশে। বিকল্প হিসেবে কোনও ব্রাহ্মণ নেতাকে বাছার প্রস্তাব দেন প্রশান্ত। সেই সূত্রে সনিয়া সপ্তাহ খানেক আগে শীলা দীক্ষিতকে দশ জনপথে ডেকে এই প্রস্তাব দেন। উমাশঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ শীলা কনৌজ থেকে সাংসদ ছিলেন। সে জন্যও শীলার কথা ভেবেছিলেন সনিয়া। কিন্তু দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ দখল করা সম্ভব নয়। কংগ্রেস লড়ছে তৃতীয় হওয়ার জন্য। হাতে সময়ও নেই বেশি। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রিত্বের পরে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল হওয়ার পরে এখন উত্তরপ্রদেশে হারের দায় মাথায় নিয়ে কী লাভ? ফলে কংগ্রেসকে অন্য বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ক্ষত্রীকে সরিয়ে নতুন মুখ আনার কথাও ভাবতে হচ্ছে সনিয়াকে। জিতিন প্রসাদের মতো রাহুল ব্রিগেডের কোনও নতুন মুখকে আনার চাপ থাকলেও গুলাম নবিরা চাইছেন যেমন প্রমোদ তিওয়ারির মতো অভিজ্ঞ কাউকে। সংগঠনের উপরে যাঁর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা আপাতত জমি তৈরি করে রাখলেও রাহুল ফিরলে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা থাকছেন মানেই রাহুলের কাঁধ কোনও ভাবেই ছোট হয়ে যাচ্ছে না।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, প্রিয়ঙ্কা এখনই নির্বাচনে লড়ছেন না। পরের লোকসভায় তিনি অমেঠী ও রায়বরেলী থেকে লড়তে পারেন। যদি অবশ্য সনিয়া আর লড়তে রাজি না হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন