পি চিদম্বরমের পথে হাঁটলেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন। কাল সংসদে সরকারকে এক ডজন প্রশ্ন করেছিলেন চিদম্বরম। সেই ধাঁচেই আজ সরকারের উদ্দেশে বারোটা প্রশ্ন ছুড়েছেন ডেরেক। চিদম্বরম সাধারণ বাজেটের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন। আর রেল বাজেটে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে মুখ খুললেন ডেরেক।
গত বাজেটের তুলনায় চলতি বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য প্রায় ৮৯০ কোটি টাকা কম বরাদ্দ করেছে রেল। আজ ওই বিষয়টি ছাড়াও, কেন শুধুমাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই রেলের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের জবাবদিবি চান ডেরেক-মানস ভুঁইয়ারা। ডেরেকের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি শাসিত রাজস্থানে ৩০%, মধ্যপ্রদেশে ১৮%, গুজরাতে ২০% বাজেট বৃদ্ধি হয়েছে। সেখানে বাংলা, দিল্লি বা কেরলের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যে বরাদ্দ কমে গিয়েছে।’’ পরিকল্পিত ভাবেই এ কাজ করা হয়েছে বলে সরব হন মানসবাবু। বলেন, সম্প্রতি রাজ্যের অলাভজনক আটটি চালু রেললাইন বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল রেল মন্ত্রক। অন্য দলের সাংসদদের উদ্দেশে ডেরেক বলেন, ‘‘সতর্ক থাকুন। কখন ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হবে টেরও পাবেন না।’’
ডেরেকের বক্তব্য শেষ হওয়ার মুখে রাজ্যসভায় উপস্থিত হন রেলমন্ত্রী। তাঁকে দেখেই ডেরেক কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনি তো ছিলেনই না। আমার প্রশ্নগুলি আপনাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’’ পাল্টা জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি আটটি রেললাইন বন্ধের সম্পর্কে এখনই উত্তর দিতে চাই।’’ পীযূষ বলেন, ‘‘আটটি রেলরুট মোটেই বন্ধ করা হয়নি। সংসদীয় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি ওই সুপারিশ করায় স্থানীয় জেনারেল ম্যানেজার রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল। এ’টি রুটিন প্রক্রিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখনও এমন চিঠি লেখা হয়েছে। রেললাইন বন্ধ হবে না ঘোষণার পরেও এ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।’’
পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দ কমানো নিয়ে রেলের বক্তব্য, গত বার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের প্রায় হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। রাজ্য সরকার জমির ব্যবস্থা না করতে পারায় এ বছর ওই প্রকল্পে বাজেট বরাদ্দ ৮৩৭ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বরাদ্দ কমেছে ৮৯০ কোটি। তুলনা করলেই দেখা যাবে অন্যান্য প্রকল্পগুলির বরাদ্দ হয় একই রাখা হয়েছে বা বাড়ানো হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ থমকে থাকায় অহেতুক অর্থ বরাদ্দ করে টাকা আটকে রাখতে চায়নি রেল।