ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেটে ‘সুখ টান’ দেওয়ার আগে সাবধান! কারণ, চলন্ত ট্রেনের দরজায় এ বার থেকে থাকছে নজরদারি চোখ।
যাত্রী নিরাপত্তা বাড়াতে ট্রেনের কামরাতে এ বার পরীক্ষামূলক ভাবে সিসিটিভি লাগানো শুরু করল রেল। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, ক্যামেরাগুলি এমন ভাবে বসানো হচ্ছে, যাতে কোনও স্টেশন থেকে কোন কোন যাত্রী ওঠানামা করছেন তা পরিষ্কার বোঝা যায়। তবে কামরার ভিতরে যাত্রীদের উপরে কোনও নজরদারি করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে রেল।
রেল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে কয়েটি ট্রেনের কয়েকটি কামরাতে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিয়মিত সেগুলি পর্যবেক্ষণও করা হচ্ছে। এরপরে খতিয়ে দেখে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রেলমন্ত্রক। উত্তর রেলের সান-ই পঞ্জাব-এর তিনটি কামরা, দক্ষিণ রেলের কেরল এক্সপ্রেস, মান্নাই এক্সপ্রেস ও রামেশ্বরম এক্সপ্রেসের একটি করে কামরায় আপাতত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ ছাড়া, ক্যামেরা বাসানো হয়েছে পশ্চিম রেলের তিনটি লোকাল ট্রেনের (ইএমইউ) মহিলা কামরাতেও। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, আগামী আর্থিক বছরের মধ্যে বিভিন্ন শাখার আরও ৫০০ কামরায় সিসিটিভি ক্যামেরার বসানোর কাজ শেষ হবে।
চলন্ত ট্রেনে বারবার চুরি, ডাকাতি এবং ধষর্ণের মত অপরাধের অভিযোগ ওঠায় বিব্রত হচ্ছিল রেলমন্ত্রক। বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। রেলে অপরাধ বাড়ায় সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে রেলমন্ত্রক। কী ভাবে ট্রেনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে ব্যাপারে রাজ্য পুলিশ (জিআরপি) ও রেল পুলিশের কর্তারা আলোচনা করেন। এক রেল কর্তার কথায়, দূরপাল্লার ট্রেনগুলি এক রাজ্য থেকে ছেড়ে দু’তিনটি রাজ্য পার করে গন্তব্যে পৌঁছয়। একটি রাজ্যে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে অন্য রাজ্যের পুলিশের কাছে বিষয়টি অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই বেশির ভাগ সময়েই তথ্য প্রমানের অভাবে হাত ফস্কে বেরিয়ে যায় অপরাধীরা।
এক রেল বোর্ড কর্তা জানান, ক্যামেরার নজরদারি থাকলে অনেক অতিরিক্ত তথ্য উঠে আসবে। স্টেশন প্ল্যাটফর্ম শুধু নয়, ক্যামেরা থাকবে ট্রেনের কামরাতেও। আর ক্যামেরায় ওঠা ফুটেজ তদন্তকারীদের সাহায্যও করবে। গত সপ্তাহে যেমন মধুপুরে চলন্ত ট্রেনে এক তরুণীকে ঘর্ষণ করার ঘটনায় ওই ক্যামেরা থেকে ওই ফুটেজ দেখেই পালিয়ে যাওয়া দুই সেনা জওয়ানকে চিহ্নিত করে দেন ওই তরুণী। এ বছর রেল বাজেটে সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব রেখেছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। এবার ওই কাজটাই শুরু করল রেলমন্ত্রক।