Gyaneshwari Express

মরেননি ‘মৃত’, টের পেল রেল

এক জন জীবিত ব্যক্তি কী ভাবে সরকারি খাতায় মৃত হিসেবে চাকরি পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২১ ০৫:৪৪
Share:

ফাইল চিত্র

সরকারি খাতায় তিনি ‘মৃত’। জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কারণে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে তাঁর পরিবার। তাঁর বোনকে চাকরিও দেওয়া হয়েছে। অথচ সেই মৃত ব্যক্তি কিনা বেসরকারি চাকরি করছেন! মৃত ব্যক্তির পাসপোর্ট নবীকরণ হয়েছে, তিনি আয়করও দাখিল করেছেন। গাড়িও কিনেছেন! গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে চমকে উঠেছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স শাখার অফিসারেরা।

Advertisement

রেল সূত্রের দাবি, ভিজিল্যান্স তদন্ত শুরু করতেই একের পর এক উঠে আসত থাকল আশ্চর্যজনক তথ্য। জানা গেল, সত্যিই রেলের খাতায় এগারো বছর আগে ‘মৃত’ সুখের জীবন যাপন করছেন। অমৃতাভ চৌধুরী নামে ওই ‘মৃত’ ব্যক্তি এবং তাঁর বাবা মিহির চৌধুরীকে জোড়াবাগান এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে সিবিআই। তবে এই ঘটনা অবশ্য শুধু অভিযুক্ত ব্যক্তির দিকে নয়, রেলের অন্দর মহলের দিকেও আঙুল তুলেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। কারণ, এমন অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে যার দায় রেল প্রশাসনও পুরোপুরি এড়াতে পারে না।

রেল সূত্রের খবর, ২০১০ সালের ২৮ মে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহার কাছে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা হয়। তাতে মৃতের তালিকায় অমৃতাভ চৌধুরীর নাম ছিল। রেলের প্রতিশ্রুতি মতো মৃতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং এক জনকে চাকরি দেওয়া হয়। অমৃতাভের বোন রেলে চাকরি পান এবং গত এক দশক ধরে শিয়ালদহ ডিভিশনের সিগন্যালিং বিভাগে কর্মরত। সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স বিভাগের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে দেখা যায়, অমৃতাভ পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণ করেছেন। প্যান-সহ আয়কর জমা দিয়েছেন। গাড়িও কিনেছেন। খোঁজ নিতে গিয়ে রেলের তদন্তকারীরা দেখেন, অমৃতাভ বেসরকারি সংস্থায় দিব্যি চাকরি করছেন। তার পরেই তাঁর অফিসে হানা দেয় রেলের দল। কিন্তু রেল সূত্রের দাবি, অমৃতাভ তদন্তকারীদের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যান। এর পরেই সিবিআইয়ের কাছে রেলের তরফে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ছেলে ও বাবাকে আটক করা হয়।

Advertisement

এক জন জীবিত ব্যক্তি কী ভাবে সরকারি খাতায় মৃত হিসেবে চাকরি পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চাকরিতে নিয়োগের আগে রেলের তরফে খোঁজখবর হয়েছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রেলের বক্তব্য, দুর্ঘটনায় মৃতদের অনেকের দেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যায়নি। তাই ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার পরে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই ডিএনএ পরীক্ষার সময়েই কারচুপি করা হয়েছিল। তার ফলেই কোনও অজ্ঞাতপরিচয় দেহ চৌধুরী পরিবারকে দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই চাকরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন