দাউদাউ করে জ্বলছে বাস। ছবি: পিটিআই।
বিকেল সাড়ে ৩টে, মঙ্গলবার। ৫৭ জন যাত্রীকে নিয়ে জৈসলমের থেকে জোধপুর যাচ্ছিল সদ্য কেনা এসি বাসটি। আচমকা আগুন ধরে যায় চলন্ত বাসে। বাসের ভিতরেই ঝলসে নিহত হন ২০ জন। কোনও মতে প্রাণে বাঁচেন বাকিরা। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিজনদের ২ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে হঠাৎ আগুন লেগে গেল বাসে? কেন বেরোতে পারলেন না এত জন যাত্রী? দুর্ঘটনার পরদিনও তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে এমনই নানা প্রশ্ন।
পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র পাঁচ দিন আগেই বাসটি কেনা হয়েছিল। মঙ্গলবার বিকেলে জোধপুর যাচ্ছিল বাসটি। চালক ছাড়াও তাতে সওয়ার ছিলেন ৫৭ জন। পথে হঠাৎ বাসের পিছন থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন চালক। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার ধারে বাসটি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু চোখের নিমেষে দাউদাউ করে আগুন ধরে যায় গোটা বাসে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিটের জেরেই এই বিপত্তি। জানা গিয়েছে, বাসটির ভিতরে ফাইবারের প্যানেল এবং পর্দার সাহায্যে এসি স্লিপার কোচের মতো ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জানলাগুলিও ছিল মজবুত কাচের তৈরি। বাসের ভিতরে থাকা বেশির ভাগ জিনিসপত্রই ছিল দাহ্য। ফলে আগুন ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি।
জানা গিয়েছে, ওই বাস রীতিমতো যাত্রীবোঝাই ছিল। কেউ কেউ দু’দিকের সিটের সারির মাঝের করিডরটিতেও বসেছিলেন। তখনই আচমকা বাসের পিছনের দিক থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। শর্ট সার্কিটের জেরে বৈদ্যুতিন তার কেটে গিয়ে সামনের একমাত্র স্বয়ংক্রিয় দরজাটিও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভিতরেই আটকে পড়েন যাত্রীরা। কেউ কেউ জানলা ভেঙে বাইরে ঝাঁপ দেন। কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা। কিন্তু সকলে বেরোতে পারেননি। ঝলসে মৃত্যু হয় তাঁদের।
সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়েরা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। তাঁরা থানায় খবর দেন। কাছের একটি সেনাছাউনি থেকে উদ্ধারকারী দল এসে জেসিবি-র সাহায্যে দরজা ভাঙে। তত ক্ষণে অবশ্য ভিতরে আটকে থাকা অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। কারও কারও দেহ এতই পুড়ে গিয়েছে যে, তা শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা প্রয়োজন। গুরুতর জখম অবস্থায় কয়েক জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।