Rajasthan

মেয়েদের স্কুলে শিক্ষক নয়, পড়াবেন শিক্ষিকারাই, নয়া ‘দাওয়াই’ রাজস্থানের মন্ত্রীর!

রাজস্থান শিক্ষা দফতরের ২০১৮-১৯ বর্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে মোট ১ হাজার ১৯টি মেয়েদের স্কুল রয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:২৫
Share:

মন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড়। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

শিক্ষা ক্ষেত্রে হেনস্থার ঘটনা রুখতে আজব উপায় বার করলেন রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী গোবিন্দ সিংহ দোস্তারা। রাজ্যে মেয়েদের সমস্ত স্কুল থেকে ৫০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকদের সরানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সেখানে শুধুমাত্র শিক্ষিকারাই পড়াবেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে সে রাজ্যের শিক্ষা মহলে। তাঁর এই পদক্ষেপকে অপরিণত ও পশ্চাদমুখী বলে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।

Advertisement

সম্প্রতি রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর-সহ বেশ কিছু এলাকার স্কুলে ছাত্রী নিগ্রহের অভিযোগ উঠছিল। প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে ‘চিন্তাভাবনা’ শুরু হয় বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।

আগামী সোমবার রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলার মন্ডাবায় উপ-নির্বাচন। শুক্রবার সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন গোবিন্দ সিংহ দোস্তারা। তিনি জানান, মেয়েদের স্কুলে মূলত শিক্ষিকা নিয়োগেই জোর দেওয়া হবে। তাতে কুলোলে পঞ্চাশোর্ধ পুরুষ শিক্ষক নিয়োগের কথা ভাবা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সবার হিসেবেই ভারতের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হারে নাটকীয় পতন​

রাজস্থান শিক্ষা দফতরের ২০১৮-১৯ বর্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে মোট ১ হাজার ১৯টি মেয়েদের স্কুল রয়েছে। কো-এডুকেশন স্কুল রয়েছে ৬৮ হাজার ৯১০টি। শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলিয়ে রয়েছেন মোট ৩ লক্ষ ৮২ হাজার জন। অর্থাৎ প্রত্যেক স্কুলেই শিক্ষিকা রয়েছেন। তাই শুধুমাত্র শিক্ষিকাদের হাতেই মেয়েরা সুরক্ষিত থাকবে, এমন যুক্তি মানতে চাইছেন না অনেকেই।

তবে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক পেলেই বিষয়টি নিয়ে এগোবেন বলে টুইটারে জানিয়েছেন গোবিন্দ সিংহ দোস্তারা। রাজ্যে মেয়েদের সমস্ত স্কুলে কত জন শিক্ষক রয়েছেন, ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ধর্মগুরু ‘কল্কি ভগবান’-এর আশ্রমে আয়কর হানা, সোনা-হিরে সহ উদ্ধার ৫০০ কোটিরও বেশি বেআইনি সম্পত্তি​

কিন্তু তাঁর এই যুক্তি ইতিমধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ইউনিসেফ-এর প্রাক্তন নীতি নির্ধারক কেবি কোঠারি সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি বলেন, ‘‘মূল সমস্যাটাই ধরতে পারেনি রাজ্য সরকার। তাই তার সঠিক দাওয়াইও খুঁজে বার করতে পারেনি। ১ হাজার ১৯টি মেয়েদের স্কুল থেকে ৫০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকদের সরিয়ে দেওয়া কোনও আহামরি কাজ নয়। তাতে কো-এডুকেশন স্কুলে পাঠরত পড়ুয়াদের অভিভাবদের মনে আতঙ্ক তৈরি হবে।’’

গোবিন্দ সিংহ দোস্তারার এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশিওলজি বিভাগের প্রধান রশমি জৈন। তাঁর কথায়, ‘‘মন্ত্রী কি ভাবছেন, হেনস্থার ঘটনা শুধু মেয়েদের স্কুলেই ঘটে? আমার তো মনে হয় সম্পূর্ণ ভাবে মহিলা পরিচালিত পৃথক স্কুল তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।’’ এ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি গোবিন্দ সিংহ দোস্তার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন