রাজস্থান সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং।
‘ভূত’-এর ভয়ে কাঁপছেন রাজস্থানের বিধায়করা!
রাজ্যের সচিবালয়ে নাকি ভূতেরা আড্ডা জমিয়েছে। আর তাদের উপদ্রবে রীতিমতো থরহরিকম্প বিধায়করা। এই ভূত তাড়াতেই এখন মরিয়া হয়ে উঠেছেন তাঁরা।
ভূত তা়ড়ানোর আয়োজনও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক হাবিবুর রহমান যেমন জানিয়েছেন, সচিবালয় থেকে অশরীরী আত্মাদের তাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের কাছে বিধায়কদের তরফে পুজো-আর্চা ও যজ্ঞের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাঁর মতে, সচিবালয় ও তার আশপাশ এখনই শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: জেএনইউয়ে আসর বসাচ্ছে আরএসএস
রহমানের মতো অন্য বিধায়করাও তেমনটাই চান। কারণ ভূতের উপদ্রবে নাকি রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তাঁরা। গত বুধবারই নাথদ্বারার বিধায়ক কল্যাণ সিংহ মারা গিয়েছেন। গত বছর অগস্টে সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন আরও এক বিধায়ক কীর্তি কুমারী। তিনি মণ্ডলগড়ের বিধায়ক ছিলেন।
কয়েক মাসের মধ্যে দুই বিধায়কের মৃত্যু যেন আরও বাড়িয়েছে এই ভয়। বেশ কয়েক জন বিধায়কের ধারণা, ওই দুই বিধায়কের মৃত্যুর পিছনেও দায়ী সচিবালয়ের ‘ভূত’। অতএব এই ভূত তাড়ানো প্রয়োজন!
আরও পড়ুন: রোটোম্যাকের কর্ণধার ধৃত
রাজ্যের সচিবালয়টি ২০০১-এ তৈরি হয়েছিল। যেখানে বিল্ডিংটি রয়েছে, বিধায়কদের দাবি, এক সময় সেখানে কবরস্থান ছিল। দুই বিধায়কের মৃত্যু এবং কবরস্থানে গড়ে ওঠা সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং— এই দুই কারণ মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে গিয়েছে। সেই কারণগুলোই ভূত-তত্ত্বের বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছে বিধায়কদের মধ্যে।
মুখ্য সচেতক কালুলাল গুর্জর যেমন দাবি করেছেন, ভূতের ভয় মন্ত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রভাব ফেলেছে। পাশাপাশি তিনি জানান, অশরীরী আত্মা তাড়াতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে কবে তা করা হবে সেটা ঠিক করবেন মুখ্যমন্ত্রী ও স্পিকার।
এই ‘ভূত-তত্ত্ব’ নিয়েই আবার বিধায়করা আবার দু’টি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। যেমন, কংগ্রেস নেতা ধীরজ গুর্জর বলেন, “ওই বিল্ডিংয়ে অশরীরী আত্মা রয়েছে, এমন কোনও দিনই মনে হয়নি বা অনুভবও করিনি কোনও দিন। যাঁরা এ সব বলছেন সম্ভবত দুর্বল হৃদয়ের মানুষ তাঁরা। এ ধরনের প্রচার মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে কুসংস্কার ছড়াবে।”
বিজেপি বিধায়ক বি সিংহ আবার যেমন বলেছেন, সচিবালয়ে ভূতের এই তত্ত্ব পুরোটাই ভিত্তিহীন। কিছু প্রবীণ বিধায়কদের বিশ্বাস কবরস্থানের উপর বিল্ডিংটি তৈরি করার কারণেই এই সমস্যা। তিনি মনে করেন, ভূতের উপস্থিতির বিষয়টি পুরোটাই অযৌক্তিক। তাই যজ্ঞেরও কোনও প্রয়োজন নেই।