নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন এড়ালেন রাজনাথ

তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে পেশ করা দু’টি আর্জির জবাবকে হাতিয়ার করে নরেন্দ্র মোদীর দল বোঝাতে চাইল, নজরদারি নিয়ে একই পথে হেঁটেছিল ইউপিএ সরকার। এখন কংগ্রেস ভণ্ডামি করছে। 

Advertisement

 সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

নজরদারি নিয়ে সরকারের নয়া নির্দেশ সম্পর্কে প্রশ্ন এড়ালেন রাজনাথ সিংহ। কিন্তু বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে মাঠে নামল বিজেপি। তথ্যের অধিকার আইনের অধীনে পেশ করা দু’টি আর্জির জবাবকে হাতিয়ার করে নরেন্দ্র মোদীর দল বোঝাতে চাইল, নজরদারি নিয়ে একই পথে হেঁটেছিল ইউপিএ সরকার। এখন কংগ্রেস ভণ্ডামি করছে।

Advertisement

২১ ডিসেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে নরেন্দ্র মোদী সরকার জানায়, ১০টি গোয়েন্দা সংস্থা প্রয়োজনে যে কোনও কম্পিউটারে আড়ি পাততে বা নজরদারি চালাতে পারবে। যে কোনও কম্পিউটারে থাকা তথ্য ডিক্রিপ্ট বা পাঠোদ্ধার করার অধিকার থাকবে সংস্থাগুলির। বিজ্ঞপ্তিতে আলাদা ভাবে মোবাইলের কথা বলা না হলেও মন্ত্রক জানিয়েছে, স্মার্টফোনগুলি কার্যত কম্পিউটারের কাজ করে। তাই নজরদারির আওতায় থাকবে সেগুলিও। বিরোধীদের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তার নামে ব্যক্তিপরিসরে হস্তক্ষেপ করছে সরকার। মোদীকে ‘ভীত একনায়ক’ তকমাও দেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। বিতর্কের মধ্যেই ফের ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ব্যাখ্যা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রথমে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারায় নজরদারির কথা বলা হয়েছিল। পরে মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ওই বিজ্ঞপ্তি ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন ও ভারতীয় টেলিগ্রাফ বিধির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, ২০০৯ সালে ইউপিএ সরকারই এই নজরদারির নিয়ম চালু করেছিল। মোদী সরকার কেবল কোন সংস্থাগুলি নজরদারি চালাতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।

আজ এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘সংসদের অধিবেশন চলছে। তাই এ নিয়ে কিছু বলব না। সংসদে প্রশ্ন করা হলে জবাব দেব।’’ কিন্তু রাজনাথ মুখ না খুললেও আসরে নামে বিজেপি। গত কাল এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৩ সালে তথ্যের অধিকার আইনে নজরদারি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল ইউপিএ সরকার। তখন তারা জানায়, প্রতি মাসে গড়ে ৭,৫০০ থেকে ৯,০০০ ফোন ও ৩০০ থেকে ৫০০টি ই-মেলে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই আর্জির জবাবেই নজরদারির দায়িত্বে থাকা ১০টি গোয়েন্দা সংস্থার নাম জানিয়েছিল ইউপিএ সরকার। মোদী সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে থাকা সংস্থার তালিকার সঙ্গে ওই তালিকা মিলে গিয়েছে।

Advertisement

বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌরের দাবি, এই হিসেব মানলে ইউপিএ জমানায় প্রতি দিন ৩০০টি ফোন ও ২০টি ই-মেলে নজরদারি চালানো হত। রাঠৌরের কথায়, ‘‘কংগ্রেস জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। নজরদারির জন্য পোস্ট অফিস আইন সংশোধন করেছিল। এখন জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে তারা ভণ্ডামি করছে।’’

রাজনীতিকদের মতে, সংসদে এ নিয়ে যে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে তা বিলক্ষণ জানেন নরেন্দ্র মোদী-রাজনাথ সিংহেরা। তাই এখন থেকেই অস্ত্র তৈরি রাখল বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন