রাজনাথ সিংহ। ছবি : পিটিআই।
রমজানে সেনা অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্তে লাভ-লোকসানের খতিয়ান বুঝে নিতে আগামী ৭ জুন দু’দিনের জন্য কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেনা অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্তের পরে উপত্যকার পরিস্থিতি কী দাঁড়িয়েছে তা নিয়ে তিনি কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সঙ্গে। বৈঠক করবেন পুলিশ ও সেনাকর্তাদের সঙ্গেও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, তারপরেই ঠিক হবে সেনা অভিযান ফের শুরু করা হবে কি না।
এ দিনও উপত্যকায় সেনার উপরে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। আজ বিকেলে উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরার হাজিনে সেনার একটি শিবিরের উপরে গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। জবাব দেয় সেনাও। ওই এলাকায় এখনও গুলির লড়াই চলছে বলে জানিয়েছে সেনা। অন্য দিকে বারামুলার সোপোরে সেনার একটি গাড়ি লক্ষ্য করে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। গাড়িটির ক্ষতি হলেও কেউ হতাহত হননি।
মেহবুবার দাবি মেনে উপত্যকায় ইতিবাচক বার্তা দিতে রমজানের সময়ে সেনা অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। শুরু থেকেই সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিল সঙ্ঘ পরিবার। কেন্দ্রের আশা ছিল, এতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গত ১৬ মে সেনা অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের আগের সপ্তাহে যেখানে উপত্যকায় চারটি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে এক সপ্তাহ পরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। গত চার দিনে হামলার তীব্রতা আরও বেড়েছে। অন্তত ১০টি স্থানে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে আহত হয়েছেন একাধিক সাধারণ মানুষ। যে হামলার দায় নিয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠন।
অবিলম্বে তাই সেনা অভিযান চালু করার জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার। সেনা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একাংশের মতে, দ্রুত সেনা অভিযান শুরু করা হোক। কারণ ইতিমধ্যেই নিজেদের অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। এখনই অভিযান শুরু না হলে ফের উপত্যকায় জাঁকিয়ে বসবে তারা। যদিও সেনা অভিযান বন্ধ রেখে সরকার চাইছে হুরিয়ত নেতৃত্বকে আলোচনার টেবিলে টেনে আনতে।
এ দিকে হামলা থামার লক্ষণ নেই সীমান্তেও। দু’দিন আগেই পাক বাহিনীর গুলিতে নিহত হন বিএসএফের দুই জওয়ান। আজ পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দেন, সন্ত্রাস ও আলোচনা এক সঙ্গে চলতে পারে না। সেনা অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত ঠিক না ভুল সেই বিতর্কেও আজ জড়াতে চাননি নির্মলা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দায়িত্ব হল সীমান্ত পাহারা দেওয়া। যদি বিনা কারণে এ দেশের সীমান্ত লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়, ভারত তার যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’’