কোথাও ‘গোরক্ষক’দের তাণ্ডব, কোথাও ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মারা। একের পর এক গণহিংসার ঘটনা নিয়ে নাজেহাল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার মধ্যেই স্বাধীনতা দিবসের আগে বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মনে করিয়ে দিলেন, ভারতীয় সমাজে হিংসার স্থান নেই। আর সে কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর কথা।
রাষ্ট্রপতির কথায়, ‘‘হাত তুলে কাউকে আঘাত করার জন্য ক্ষমতা প্রয়োজন। কিন্তু সেটা না করতে আরও বেশি ক্ষমতার প্রয়োজন। সমাজে হিংসার কোনও স্থান নেই। হিংসার চেয়ে অহিংসার ক্ষমতা যে অনেক বেশি সে কথা গাঁধীজিই বলে গিয়েছেন।’’
রাষ্ট্রপতির মতে, এখন ভারত অনেক লক্ষ্যপূরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। কোনও বিতর্কের জন্য সেই লক্ষ্যপূরণের কাজ ব্যাহত হওয়া উচিত নয়। একইসঙ্গে দেশবাসীকে তাঁর বার্তা, ‘‘যে সব ভারতীয় অপেক্ষায় থাকা মানুষকে বঞ্চিত করে কিছু পাওয়ার চেষ্টা করছেন না তাঁরাই স্বাধীনতা সংগ্রামের মন্ত্রের প্রকৃত অনুগামী।’’
সন্ত্রাস দমনে দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন তিনি। একই সঙ্গে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন দেশের কৃষক ও মহিলাদের ভূমিকাকে।
জানালেন, দেশে স্বাধীনতার প্রসার ও মহিলাদের স্বাধীনতার প্রসার অনেক সময়েই কার্যত সমার্থক। কারণ, আধুনিক সমাজে মহিলাদের বিশেষ ভূমিকা আছে। তাঁরা পরিবারের নোঙর হিসেবে কাজ করতে পারেন। আবার দেশের কর্মযজ্ঞে সামিল হতে পারেন। কোন পথে হাঁটবেন, সেই সিদ্ধান্ত তাঁরাই নেবেন। কিন্তু তাঁরা যাতে তাঁদের অধিকার ভোগ করতে পারেন, সে জন্য উপযুক্ত সুযোগ ও সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে ভারতের রাষ্ট্র ও সমাজকে।
রাষ্ট্রপতির কথায়, ‘‘গাঁধীজি মনে করতেন ভারতীয় সভ্যতা সব সময়ে জানালা খোলা রাখে। দরজা বন্ধ রাখা এই সভ্যতার ঐতিহ্য নয়। এটাই ছিল গাঁধীজির স্বদেশি মন্ত্রের মূল কথা। এখনও বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসারের সময়ে আমাদের এই মন্ত্রের কথা মাথায় রাখতে হবে।’’ রাষ্ট্রপতির মতে, ভারতীয়ত্ব কেবল ভারতবাসীর সম্পদ নয়। বিশ্বের দরবারে ভারতের পসরারও অঙ্গ।