গুরমিত রাম রহিম। ফাইল চিত্র।
হাজতবাসের পর তিনি এমন ভাব করছেন যেন তাঁকে ‘লঘু পাপে গুরু দণ্ড’ দেওয়া হয়েছে! কখনও কাঁদছেন, কখনও নাকি চিত্কার করে বলছেন, “কী করেছি আমি? আমার ভুলটা কোথায়?” রোহতকের সুনারিয়া জেলের কয়েদিরা নাকি প্রতি রাতেই এই কথাগুলো শুনছেন। জেলের যে সেল থেকে কথাগুলো ভেসে আসছে, সেখানে সদ্য সাজা পেয়ে এসেছেন নতুন এক কয়েদি। তিনি আর কেউ নন, ধর্ষক ‘বাবা’ গুরমিত রাম রহিম।
আরও পড়ুন: ‘বাবা’ নয়, তার পরিচয় এখন কয়েদি নম্বর ৮৬৪৭
‘বাবা’র পাশের সেলেই ছিলেন দলিত নেতা স্বদেশ কারার। জেল থেকে সদ্য মুক্তি পেয়েছেন তিনি। স্বদেশ জানান, সারা দিন যেমন তেমন ভাবে কাটলেও, রাতে যেন বাবা-র আচরণ সম্পূর্ণ বদলে যায়। সারা রাত ধরে চিত্কার করতে থাকেন সেলের ভিতর। ঠিক করে ঘুমোচ্ছেন না, খাচ্ছেন না। শুধু প্রলাপ বকে যাচ্ছেন, তিনি কী এমন করেছেন যে তাঁকে এমন সাজা দেওয়া হল! আরও অবাক করা তথ্য দেন স্বদেশ। তিনি জানান, রাম রহিমের কারণে এতগুলো লোকের প্রাণ যাওয়াটা নাকি কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেনি জেলের অন্য কয়েদিরা। রাম রহিমের বিরুদ্ধে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। অন্য কয়েদিদের সঙ্গে এক সেলে রাখা হলে রাম রহিম খুন হয়ে যেতে পারেন, এই আশঙ্কায় তাঁর জন্য আলাদা সেলের ব্যবস্থা করেন জেল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: কোথায় হানিপ্রীত? লুক আউট নোটিস জারি করল হরিয়ানা পুলিশ
যে রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, যে রাম রহিমের জন্য হরিয়ানা-পঞ্জাব জ্বলেছে, ৩৮টা মানুষের প্রাণ গিয়েছে, সেই রাম রহিমই জেলের ভিতরে বসে বলছেন, কী দোষ তার! জেলের অন্য কয়েদিরাও তাঁর এমন ভনিতায় অবাক। স্বদেশ জানান, জেলের নিয়ম অনুযায়ী অন্য কয়েদিদের মতোই রাখা হয়েছে রাম রহিমকে। বিলাসবহুল জীবন থেকে সোজা এসে পড়েছেন জেলের ছোট সেলে। যেখানে নেই এসি, নেই আরামদায়ক বিছানা, নেই কোনও স্বাচ্ছন্দ্যও। এটা যেন কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। এমনকী তার বর্তমান পরিচয়, কয়েদি নম্বর ৮৬৪৭, এতেও প্রবল আপত্তি ‘বাবা’র!
দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গত ২৮ অগস্ট ২০ বছরের সাজা হয়েছে তাঁর। বিলাসবহুল জীবন থেকে তাঁর ঠাঁই এখন রোহতকের সুনারিয়া জেলের ছোট্ট একটা কুঠুরিতে। সর্ব ক্ষণ পাহারায় রয়েছে চার কারারক্ষী।