ফিল্মি: শৌচালয় অভিযানের হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরির অভিযানে নেমে রাঁচী পুর নিগমের হাতিয়ার এখন বলিউড। পরিচিত ফিল্মি দৃশ্যকে সামনে রেখে জনসচেতনতা প্রসারে নেমেছেন নিগম কর্তৃপক্ষ।
দৃশ্য-১। দিওয়ার। অমিতাভ বচ্চন ও শশী কাপুর দু’জনেই মাকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছেন। মা, নিরূপা রায় ছেলেদের সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, যে আগে বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করবে তিনি তাঁর বাড়িতেই যাবেন। মায়ের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিস করছেন ‘মোগাম্বো’—মাতাজি আপনার এই সিদ্ধান্তে মোগাম্বো ‘খুশ হুয়া’।
শোলে, দিওয়ার, মিস্টার ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে হালফিলের ব্লক বাস্টার দাবাং। রাঁচী শহর জুড়ে এখন এমন হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে সামিল পুর নিগমের এক আধিকারিকের কথায়, ঝাড়খণ্ডের গ্রামগঞ্জই শুধু নয়, খোদ রাঁচী শহরেরও বহু বাড়িতে শৌচালয় নেই। শহরের প্রতিটি বাড়িতে শৌচালয় তৈরির লক্ষ্য নিয়েই এই জনপ্রিয় ফিল্মি দৃশ্যগুলিকে তাঁরা ব্যবহার করছেন। প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পুরকর্তা সন্দীপ কুমারের কথায়, ‘‘বলিউডের অবিস্মরণীয় দৃশ্যগুলি সাধারণ পথচলতি মানুষের চোখ টানছে। মজার মজার ডায়লগ মানুষের মনেও ধরছে। তাঁরা আলোচনা করছেন। তাঁরা ভাবছেন। এখান থেকেই সাধারণ মানুষের সচেতনতা তৈরি হচ্ছে।’’
রাঁচীর কাঁকে রোড। দৃশ্য-২। সোনাক্ষী সিন্হা পুলিশ অফিসার সলমন তথা চুলবুল পাণ্ডেকে পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘যতই তুমি দাবাং পুলিশ অফিসার হও না কেন, বাড়িতে শৌচালয় না তৈরি করলে কেউ তোমাকে মানবে না।’’ সপ্রতিভ চুলবুলের চটপট জবাব, ইতিমধ্যেই তার বাড়িতে শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
দৃশ্য-৩। শোলে। জয় অর্থাৎ অমিতাভ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন। বীরু তাঁর প্রাণের বন্ধুর কাছে জানতে চাইছেন, ‘‘কে তোমার এমন অবস্থা করল?’’ জয়ের উত্তর, বাড়িতে শৌচালয় না থাকায় রাতে বাইরে শৌচকর্ম করতে গিয়ে ডাকাতের খপ্পরে পড়েই তাঁর এই বেহাল।
‘পাবলিক’ মজা তো পেল, কিন্তু শৌচালয় হবে তো? পুরকর্তাদের দাবি, এই হোর্ডিংগুলি টাঙানোর পর থেকে রাঁচীর বস্তি এলাকাগুলি থেকে শৌচালয় তৈরির আবেদন পত্র সংগ্রহের প্রবণতা বেড়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুর কর্মীরা সমীক্ষা চালাচ্ছেন। মানুষকে বোঝাচ্ছেন এর গুরুত্ব।