অসমে দলের দায়িত্ব রঞ্জিৎকে দিলেন অমিত

শেষ পর্যন্ত প্রদেশ বিজেপি সভাপতি হিসেবে রঞ্জিৎকুমার দাসের নাম ঘোষণা করলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। রঞ্জিৎবাবু বর্তমানে অসম বিধানসভার স্পিকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৫
Share:

রঞ্জিৎ দাস

শেষ পর্যন্ত প্রদেশ বিজেপি সভাপতি হিসেবে রঞ্জিৎকুমার দাসের নাম ঘোষণা করলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। রঞ্জিৎবাবু বর্তমানে অসম বিধানসভার স্পিকার। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানালেন, বছর শেষ হওয়ার আগেই রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হবে।

Advertisement

প্রদেশ বিজেপির সভাপতি পদে কে বসবেন, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জটিলতা চলছিল। রমেন ডেকা, মীরা বরঠাকুর, কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা, রাজেন গোঁহাই, শান্তনু ভরালির নাম নিয়ে চলছিল আলোচনা। এর মধ্যে শান্তনুবাবুকে কার্যবাহী সভাপতিও করা হয়েছে। কিন্তু রঞ্জিৎবাবুর নাম নিয়ে কোনও আলোচনা কখনও হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, আলোচনায় থাকা নামগুলি নিয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছিল না। আরএসএসের সব নির্দেশ মেনে চলা, দলের সব স্তরের কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, রাজ্য বিজেপিতে বিতর্কের ঊর্দ্ধে থাকার সব শর্ত কেউ পূরণ করতে পারছিলেন না।

দলের অন্দরমহলের খবর— একমাত্র মহিলা দাবিদার হিসেবে মীরা বরঠাকুরের নাম উঠলেও তাঁকে সকলে সমর্থন করেননি। রাজেন গোঁহাই কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মন্তব্যে তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষ রয়েছে। রমেন ডেকার নিজস্ব মতামত দৃঢ। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতানৈক্য হতে পারত। কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা বিধানসভা উপনির্বাচনে তরুণ গগৈয়ের কাছে হেরেছেন। তাঁর বয়স ও অভিজ্ঞতাও কম। সব দিক সামলাতে তাই রঞ্জিৎবাবুর নামই ঘোষণা করা হয়। দলীয় সূত্রে খবর, আগের বার স্পিকার হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রাক্তন সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য। দলে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি থাকায় স্পিকার বদল করা হবে। তখন, ফের সিদ্ধার্থবাবুকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। সভাপতি পদে থাকার সময় সিদ্ধার্থবাবুর বিরুদ্ধে স্বৈরতন্ত্রের অভিযোগ উঠলেও হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে দলে টেনে তিনিই রাজ্যে বিজেপি সরকার আনার ভিত গড়েছিলেন।

Advertisement

বরপেটার রঞ্জিৎবাবু সরভোগ কেন্দ্র থেকে দু’বার বিধায়ক হয়েছেন। ‘ইন্ডিয়ান ইনফরমেশন সার্ভিসের’ প্রাক্তন এই অফিসার আগে সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৯২ সাল থেকে তিনি বিজেপির কর্মী। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বটানির এমএসসি ও সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা থাকা রঞ্জিৎবাবু কর্মজীবন শুরু করেন নগাঁও বিবিকে কলেজ ও বরপেটা এমসি কলেজে শিক্ষকতা দিয়ে। আইআইএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি দিল্লি যান। একাধিক ইংরাজি ও অসমীয়া সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা ও মুখ্য সম্পাদকের পদে কাজ করেছেন তিনি।

আজ তিনি বলেন, ‘‘দলের নেতৃত্ব আমার উপরে ভরসা রেখে যে দায়িত্ব দিয়েছেন- তা নিষ্ঠা সহকারে পালন করব। দলের ভিতরে ও জোট শরিকদের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি অটুট রাখা, দলের ভিত রাজ্যে আরও মজবুত করা, রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখা আমার প্রধান কাজ হবে।’’

অন্য দিকে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, বর্তমানে রাজ্য মন্ত্রিসভায় আটটি পদ খালি রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করা হতে পারে। জোট শরিক অসম গণ পরিষদ ও বিপিএফ ইতিমধ্যেই আরও অন্তত দু’জন করে বিধায়ককে মন্ত্রী করার দাবি জানিয়ে রেখেছে। শাসক জোটে বিজেপির ৬০ জন, অসম গণ পরিষদের ১৪ জন ও বিপিএফের ১২ জন করে বিধায়ক রয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী আট জন, প্রতিমন্ত্রী দু’জন। তার মধ্যে বিজেপির ছ’জন, বিপিএফ ও অগপর দু’জন করে মন্ত্রী রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন