সেনা জওয়ানদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত কার্বি আংলং। জনতার ক্ষোভের দিকে তাকিয়ে এ নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে সেনাবাহিনীও। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যায়নি। এসপি মুগ্ধজ্যোতি মহন্ত জানান, ডকমকা থানায় খরিসিং আথর গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছেন, সোমবার সেনাবাহিনীর উর্দিধারী ৮ জওয়ান জঙ্গি অভিযানের নামে আঞ্জুকপানি এলাকার ওই গ্রামে হানা দেয়। গ্রামের পুরুষদের ভয় দেখিয়ে দূরে সরিয়ে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে তারা জঙ্গলে টেনে নিয়ে যায়। অভিযোগ, সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে জওয়ানরা। মেয়েটির মা ও অন্য এক আত্মীয়া কিশোরীর খোঁজে জঙ্গলে গেলে তাঁদের উপরেও যৌন নিগ্রহ করা হয়।
এর পরই তিন জন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষায় পাঠানো হয়। ওই কিশোরীকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে সেনাবাহিনীর পোশাক মিলেছে। সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সম্বিত ঘোষ জানান, পুলিশ সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানিয়েছে। সেনাবাহিনী পুলিশের তদন্তে সাহায্য করবে। সেনাও বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জাঠ রেজিমেন্টের নাম জড়ালেও, এখনও এ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘অনেক সময় জঙ্গি বা দুষ্কৃতীরা সেনার পোশাক ব্যবহার করে। তবে, কোনও জওয়ান দোষী স্যব্যস্ত হলে, তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
অভিযোগ দায়ের হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায়, গত কাল জেলার মহিলা ও ছাত্র সংগঠন, আঞ্চলিক কংগ্রেস নিন্দায় সরব হয়। জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও করে তাঁকে স্মারকলিপি দেয় আন্দোলনকারীরা। জনতা দোষীদের ধরতে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু এ দিনও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায়, বিরাট মিছিল সেনা শিবিরের দিকে এগোয়। সেনা শিবির ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশ জনতাকে বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশকে আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীদের একাংশ। কয়েক জন পুলিশকর্মী জখম হন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসপির নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী সেনাশিবির ঘিরে রেখেছে।
ডিএসপি এস সিংসনের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্তকারী দল গড়েছে। সেনাবাহিনীকে ঘটনাটি জানিয়ে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে। তবে, সেনাবাহিনী এখনও কোনও জওয়ানকে শনাক্ত করেনি. কার্বি আংলং-এর জেলাশাসক মুকুল গগৈ জানান, ইতিমধ্যে অতিরিক্ত জেলাশাসক সোনমিলি টেরাংপিকে ঘটনার প্রশাসনিক তদন্ত চালাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক ও এসপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গ্রামবাসীদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।