গুজরাত জুড়ে নিশানায় অন্য রাজ্যের বাসিন্দা 

চোদ্দো মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয় বিহার থেকে আসা এক শ্রমিক। আর সেই ঘটনার জেরে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে গুজরাতের একটা বড় অংশে।

Advertisement

আমদাবাদ

সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০৭
Share:

চোদ্দো মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয় বিহার থেকে আসা এক শ্রমিক। আর সেই ঘটনার জেরে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে গুজরাতের একটা বড় অংশে। অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে বিহার আর উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা মানুষদের বেছে বেছে হামলার নিশানা করা হচ্ছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে তাঁদের সম্পত্তি। গোটা রাজ্যে এমন হিংসা ছড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় দেড়শো জনকে।

Advertisement

মূল ঘটনা ২৮ সেপ্টেম্বরের। সবরকণ্ঠা জেলার হিম্মতনগর শহরের কাছে চোদ্দো মাসের এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। রবীন্দ্র সাউ নামে বিহার থেকে আসা এক শ্রমিককে সেই ঘটনায় গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় একটি সেরামিক কারখানায় কাজ করত রবীন্দ্র। এই ঘটনার ঠিক পর পরই গুজরাতের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্‌ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের নিশানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ডিজি শিবানন্দ ঝা জানিয়েছেন, শুধু সবরকণ্ঠাই নয়, গাঁধীনগর, মেহসানা, পাটন, আমদাবাদের মতো বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় ঠাকোর সম্প্রদায়ের এক দল সমর্থক হিংসা ছড়াতে শুরু করে। গত ২ অক্টোবর, মেহসানার বডনগর শহরে প্রায় ২০০ জন ঠাকোর সেনার সমর্থক একটি কারখানায় ভাঙচুর চালায়। সেখানকার দুই কর্মচারীকে বেধড়ক মারধরও করা হয়। মেহসানা পুলিশ জানাচ্ছে, ওই ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো উস্কানিমূলক বিভিন্ন বার্তা এ ক্ষেত্রে আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে বলে মনে করছে পুলিশ।

একই ছবি দেখা গিয়েছে আমদাবাদ, গাঁধীনগরেও। ৩ তারিখ আমদাবাদের চন্দলোদিয়া এলাকায় ঠাকোর সম্প্রদায়ের লোকজন তাণ্ডব চালায়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ফুচকা বিক্রেতাদেরও নিশানা করে আক্রমণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। গাঁধীনগরের আইজি জানান, যে হেতু ধর্ষিতা শিশুকন্যাটি ঠাকোর সম্প্রদায়ের, সেই জন্য তারা বেছে বেছে বিহার আর উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দাদের নিশানা করছেন। চাপে পড়ে মুখ খুলতে হয়েছে ওই সম্প্রদায়ের কংগ্রেস নেতা অল্পেশ ঠাকোরকে। স্থানীয় ক্ষত্রিয় ঠাকোর সেনার প্রধান অল্পেশ কালই স্থানীয় বাসিন্দাদের শান্তি বজায় রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর অবশ্য দাবি, এত দিন কোনও রকমের হিংসায় মদত তিনি দেননি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে বসবাসকারী অ-গুজরাতিরাও আমাদের ভাইয়ের মতো। তাঁদের রক্ষা আমাদেরই করতে হবে।’’

Advertisement

ডিজি ঝা আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত হামলার মোট ১৮টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেড়শো জনকে গ্রেফতার করেছি। এই ধরনের ঘটনা প্রশাসন একেবারেই বরদাস্ত করবে না। স্থানীয় থানাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে সব এলাকায় ভিন্‌ রাজ্যের বাসিন্দারা বেশি থাকেন, সেখানকার আবাসন, কারখানায় বেশি করে নজর রাখতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো বার্তার উপরও নজর রাখছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন