গর্ভাবস্থা ‘শেষ’, সন্তানের জন্ম দিল নাবালিকা

শুক্রবার জে জে হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় নাবালিকা। সদ্যোজাতকে হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। ওজন মাত্র ১.৮ কেজি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৬
Share:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই গত কাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল বত্রিশ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাকে। আজ মুম্বইয়ের জে জে হাসপাতালে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিল ১৩ বছরের ওই কিশোরী।

Advertisement

যদিও গত বুধবার আবেদনকারীর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে ভ্রূণের এত পরিণত অবস্থায় গর্ভপাতের রায় দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে গর্ভপাত করানো হোক। অন্য দুই বিচারপতি অমিতাভ রায় ও এ এম খান্ডিলকর বলেন, ‘‘আবেদনকারীর বয়স বিচার করে এবং যৌন হেনস্থার দরুন সে যে রকম মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সে কথা ভেবে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়াই যথার্থ মনে করেছে আদালত।’’

কিন্তু একই সঙ্গে সে দিন প্রশ্ন উঠেছিল, ১৩ বছরের একটি নাবালিকার এই অবস্থায় গর্ভপাত করানো বিপজ্জনক নয় কি? চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছিলেন, আট মাসের ভ্রূণ পরিপূর্ণ। গর্ভপাত করালে মায়েরও ঝুঁকি থেকে যাবে। সে-ও তো শিশু। অনেকের মত ছিল, শুধু গর্ভপাতই নয়, প্রসবও বিপজ্জনক। এর পরই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট দেখে সুপ্রিম কোর্টের কথা মতো ‘টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সি’-র পথ বেছে নেন চিকিৎসকেরা। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুম্বইয়ের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নিখিল দাতার (আগে কিশোরীর চিকিৎসা করেছিলেন) বলেন, ‘‘গর্ভপাতের রায় দিয়ে নাবালিকার গর্ভাবস্থা ‘শেষ’ করার কথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভ্রূণকে হত্যা করার কথা বলেনি। আদালত শুধুমাত্র নাবালিকার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত ছিল। সে-ও তো একটি শিশু। তাই এই পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

শুক্রবার জে জে হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় নাবালিকা। সদ্যোজাতকে হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। ওজন মাত্র ১.৮ কেজি। যদিও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অশোক আনন্দ বলেন, ‘‘শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল। পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।’’ নাবালিকাকে আগামী এক সপ্তাহ হাসপাতালে রাখা হবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সদ্যোজাতকে দত্তক নেওয়ার জন্য পাঠানো হবে।

মুম্বইয়ের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিল তার বাবার সহকর্মী। আতঙ্কে গোটা বিষয়টি লুকিয়ে যায় কিশোরী। যখন জানাজানি হয়ে যায়, সে তখন ২৭ সপ্তাহের গর্ভবতী। এ দিকে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩(২)বি ধারা অনুযায়ী ভ্রূণের বয়স ২০ সপ্তাহ হয়ে গেলে আর গর্ভপাত করানো যায় না। তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কিশোরীর পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন