দুই মামলা মিলিয়ে ২০ বছর জেলে কাটাতে হবে রাম রহিমকে। রায় হয়েছে তেমনই। কিন্তু দুই ধর্ষিতা চাইছেন, সর্বোচ্চ সাজা হোক। ছবি: এএফপি।
সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিল সিবিআই। কিন্তু গুরমিত রাম রহিম সিংহের কৌঁসুলিরা আর্জি জানিয়েছিলেন, বাবা রাম রহিমের ‘মানব কল্যাণমূলক’ কাজের কথাও মাথায় রাখা হোক। ৩৭৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। বিচারক যাবজ্জীবন দিলেন না, দুই মামলায় ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিলেন। ধর্ষক সাজা পাচ্ছেন, দুই অভিযোগকারিনী এতে খুশি। কিন্তু তাঁরা সন্তুষ্ট নন। আরও বড় সাজার দাবিতে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করছেন দু’জনে। রাম রহিমের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন অংশুল ছত্রপতিও। বাবার খুনের বিচার পেতেই লড়বেন তিনি।
১৫ বছর আগে মুখ খুলেছিলেন তাঁরা। বাবা রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। তার পরে বহু ঝড়-ঝাপটার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। রাম রহিমের মতো অসীম প্রভাবশালীর অপরাধ আদৌ কোনও দিন প্রমাণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ও ছিল বিস্তর। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি। ২০১৭ সালের ২৮ অগস্ট কাঙ্খিত মুহূর্তটা এল বটে। তবে দুই নির্যাতিতাই মনে করছেন, সর্বোচ্চ সাজাই হওয়া উচিত ছিল গুরমিত রাম রহিম সিংহের।
আরও পড়ুন: কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘বাবা’, বিচার পেল ‘মেয়ে’দের চোখের জল
দীর্ঘ এবং অসম লড়াইয়ে জয় যে হেতু পেয়েছেন, সে হেতু মনোবলও বেড়ে গিয়েছে দু’জনেরই। তাই আরও একটা লড়াই শুরু করতে চলেছেন তাঁরা। এনডিভি তাদের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রাম রহিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের দাবি জানাবেন দুই ধর্ষিতা। জানিয়ে দিয়েছেন সোমবারই।
রাম রহিমের অসামাজিক কার্যকলাপের কথা প্রকাশ্যে এনে খুন হয়েছিলেন যে সাংবাদিক, সেই রামচন্দ্র ছত্রপতির ছেলে অংশুল ছত্রপতি অবশ্য রায়ে খুশি। সোমবার রায় শোনার পরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন বলতাম যে রাম রহিম আপত্তিকর কার্যকলাপ করেন, তখন লোকে আমাদের কথা বিশ্বাস করত না। আমি খুশি, যে এ বার আদালতে সেটা প্রমাণ হয়ে গেল।’’
আরও পড়ুন: ১০ বছরের কারাদণ্ড ধর্ষক ‘বাবা’ রাম রহিমের
রাম রহিমের সাজা হয়েছে ধর্ষণের মামলায়। রামচন্দ্র ছত্রপতির খুনের মামলা কিন্তু এখনও ঝুলছে। সেই মামলার রায় এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশুলের কাছে। রাম রহিম জেলে ঢুকেছেন ঠিকই। কিন্তু বাবার জন্য সুবিচার আদায় করতে অংশুল লড়াই চালিয়ে যাবেন।