শীর্ষ ব্যাঙ্ক ছাঁটল বৃদ্ধির পূর্বাভাস

চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে বৃদ্ধি ৫.৭ শতাংশে নেমে আসার পরে বাকি তিন ত্রৈমাসিকে পরিস্থিতি যে কিছুটা শোধরাবে, সেই আশার কথা সত্যিই শুনিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

অর্থনীতির হাল নিয়ে সমালোচনার ঝাঁঝালো জবাব দিতে নরেন্দ্র মোদী মুখ খোলার দিনেই বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সঙ্গে স্পষ্ট জানাল, কৃষি ঋণ মকুব এবং প্রস্তাবিত ত্রাণ প্রকল্পের (স্টিমুলাস প্যাকেজ) জেরে লাফিয়ে বাড়তে পারে রাজকোষ ঘাটতি। তা আবার উস্‌কে দিতে পারে মূল্যবৃদ্ধিকে। যে মূল্যবৃদ্ধি মাত্রাছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রুখতেই বুধবার সুদ (রেপো ও রিভার্স রেপো রেট) একই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

Advertisement

এ দিন বিরোধীদের এক হাত নিতে রীতিমতো ‘হোমওয়ার্ক’ করে আসা বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর দাবি, আগামী দিনে অর্থনীতির ছবি যে উজ্জ্বল, ঋণনীতি ঘোষণায় সে কথা বলেছে শীর্ষ ব্যাঙ্কই। বৃদ্ধির হার ধাপে ধাপে ৭.৭ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।

চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে বৃদ্ধি ৫.৭ শতাংশে নেমে আসার পরে বাকি তিন ত্রৈমাসিকে পরিস্থিতি যে কিছুটা শোধরাবে, সেই আশার কথা সত্যিই শুনিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বলেছে শেষ তিন মাসে বৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ টপকানোর কথাও। কিন্তু তা পূর্বাভাসের একটি পিঠ। কারণ, এ দিনই ২০১৭-’১৮ সালের জন্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছে তারা। অগস্টেও যা ছিল ৭.৩%। বিরোধীরা-সহ অনেকে বলছেন, সে কথা কিন্তু মোদী নিজের বক্তৃতায় তোলেননি।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর কাজ ছ’মাসে করব, দাবি রাহুলের

শিল্প, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে শিল্পমহলের পাশাপাশি সুদ ছাঁটাইয়ের পক্ষে দীর্ঘ দিন সওয়াল করছিল কেন্দ্রও। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ দিন বলেছে, শুধু কৃষি ঋণ মকুব এবং প্রস্তাবিত ত্রাণ প্রকল্পের দৌলতেই রাজকোষ ঘাটতি বাড়তে পারে প্রায় এক শতাংশ। যা পাকাপাকি ভাবে ০.৫% বাড়িয়ে দিতে পারে মূল্যবৃদ্ধির হারকে। অর্থাৎ ইঙ্গিত, সেই আশঙ্কা এ দিন সুদ না-কমানোর একটা কারণ।

অনেকে বলছেন, এ তো সুদ না-কমার দায় ঘুরিয়ে কিছুটা কেন্দ্রের ঘাড়েই চাপিয়ে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে কৃষি ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতিকে অস্ত্র করে প্রচারে নেমেছিল বিজেপি। পরে উত্তরপ্রদেশের রাস্তায় হেঁটে ওই ঋণ মকুব করেছে আরও কয়েকটি রাজ্য। আর অনেকের অভিযোগ, নোটবন্দি আর তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর কারণে ধাক্কা খাওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই এখন ত্রাণ প্রকল্পের কথা ভাবতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। সুতরাং ‘নিজেদের’ দুই পদক্ষেপের কারণেই কেন্দ্রের সুদ কমানোর সওয়াল ধোপে টিকল না বলে মনে করছেন তাঁরা। ভারতে উপদেষ্টা সংস্থা নোমুরা-র মুখ্য অর্থনীতিবিদ সোনাল বর্মার কথায়, ‘‘ঘাটতি বাড়ার আশঙ্কা থাকায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক যে সুদ কমাবে না, তা প্রত্যাশিত ছিল। সেটিই ঘটেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন