National News

‘শুধু আমার মেয়েই নয়, বিচার পেল ওর মতো সবাই’

সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না নির্ভয়ার মা আশা দেবী। দু’চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল জল। কাঁদতে কাঁদতেই বললেন, ‘‘আমি খুশি হয়েছি। আমার মেয়ে বিচার পেল। শুধুই আমার মেয়ে নয়, এই ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে আর যাঁদের হাল হয়েছে আমার মেয়ের মতো, তাঁদের সবার আত্মাই শান্তি পেল। তাঁরাও বিচার পেলেন।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ১৬:৩০
Share:

নির্ভয়ার বাবা ও মা।

সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না নির্ভয়ার মা আশা দেবী। দু’চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল জল। কাঁদতে কাঁদতেই বললেন, ‘‘আমি খুশি হয়েছি। আমার মেয়ে বিচার পেল। শুধুই আমার মেয়ে নয়, এই ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে আর যাঁদের হাল হয়েছে আমার মেয়ের মতো, তাঁদের সবার আত্মাই শান্তি পেল। তাঁরাও বিচার পেলেন। অস্বীকার করব না, এক এক সময়ে খুব হতাশ হয়ে পড়তাম। কিন্তু তার পরের মুহূর্তেই আবার নিজেকে জাগিয়ে তুলতাম। ভাবতাম, বিচার পাবই। আমার মেয়ে যে ওপর থেকে সব দেখছে!’’

Advertisement

কথা বলতে বলতেই কান্নায় ঢেকে গেল আশা দেবীর গলার স্বর। একটু থেমে বলতে শুরু করলেন, ‘‘ওর (নির্ভয়া) মৃত্যুর পরের প্রত্যেকটা দিনের কথা মনে পড়ছে। মাঝে-মধ্যেই খুব হতাশ হয়ে পড়তাম। ভাবতাম, সঠিক বিচার পাব তো? তার পরেই আবার উৎসাহ নিয়ে ছোটাছুটি করতাম আদালতে। মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে প্রায় প্রত্যেকটা মুহূর্তেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। আদালতে লড়তে হয়েছে। সরকারি কর্তাদের দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে। এমনকী, লড়াইটা করতে হয়েছে নিজের সঙ্গেও।’’

আর নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিংহের প্রতিক্রিয়া?

Advertisement

বললেন, ‘‘আজ রাতে খুব আরাম করে ঘুমোতে পারব! দুশ্চিন্তায়, উদ্বেগে-উৎকষ্ঠায় কত রাত যে ঘুমোতে পারিনি! আর ক’টা দিন পরেই ১০ মে মেয়ের (নির্ভয়া) জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ ওর বয়স হত ২৮ বছর। আমি খুশি, সুপ্রিম কোর্ট আমাদের মনের কথা শুনতে পেয়েছে। সেই ভাবেই বিচার হয়েছে, দোষীদের শাস্তি হয়েছে। নির্ভয়ার মনের কথাও বুঝতে পেরেছে। বিপদের দিনে যাঁরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের সকলের কাছেই আমরা কৃতজ্ঞ। গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ।’’

আরও পড়ূুন- নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসিই বহাল, ক্ষমার প্রশ্ন নেই: সুপ্রিম কোর্ট

তখনও রায় ঘোষণা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের চত্বরে উৎকণ্ঠায়, উদ্বেগে এক রকম থরথর করে কাঁপছিলেন নির্ভয়ার মা। উত্তেজনায় অধীর হয়ে পড়েছিলেন নির্ভয়ার বাবা বিএন সিংহও। তখনও বিচারপতিরা এসে বসেননি সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে। উত্তেজনায় পায়তারি করছিলেন নির্ভয়ার বাবা। বার বার উঁকি মারছিলেন এজলাসে। দেখছিলেন, বিচারপতিরা এজলাসে পৌঁছেছেন কি না। পায়চারি করতে করতেই নির্ভয়ার বাবা বলছিলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের কথা ছাড়ুন, ভগবানই ওদের ক্ষমা করবে না। দেখে নেবেন, ওদের মৃত্যুদণ্ডই দেওয়া হবে।’’ পাশ থেকে বলে উঠলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী, ‘‘এখন একটাই শাস্তি হতে পারে। মৃত্যুদণ্ড। সেটাই হওয়া উচিত। মৃত্যুদণ্ডই যেন হয় দোষীদের। আদালতের ওপর আমাদের পুরোপুরি আস্থা রয়েছে। আমরা নিশ্চিত, সুপ্রিম কোর্ট আজ দোষীদের মৃত্যুদণ্ডই দেবে। আমি নিশ্চিত, আমার মেয়ে যে বিচার চাইছে, সুপ্রিম কোর্ট সেটাই দেবে। আর সেই রায় গোটা বিশ্বে নজির হয়ে থাকবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement