তিনি দুঃখ পেয়েছেন। তিনি ভয়ও পেয়েছেন। তিনি অমর সিংহ।
মুলায়ম সিংহ যাদবের পরিবারে কাকা-ভাইপোর ঝগড়া লাগানোর অভিযোগের আঙুল তাঁর দিকে। কিন্তু আজ অমর দাবি করলেন, তিনি মোটেও পরিবারে ভাঙন ধরাননি। বরং তাঁর দাবি, “যদি আমাকে বলি দিলে এই সমস্যার সমাধান হয়, তা হলে দেওয়া হোক”।
ছ’বছর পরে অমর সমাজবাদী পার্টিতে ফিরতেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়েছে তাঁর কাকা শিবপালের। বিড়ম্বনায় পড়েছেন মুলায়ম। তিনি অমরের পাশে দাঁড়ালেও অখিলেশ অমরকে ‘দালাল’ আখ্যা দিয়েছেন।
আজ অমর জানিয়েছেন, এই কথায় ভারী দুঃখ পেয়েছেন তিনি। আবেগরুদ্ধ গলায় তাঁর ব্যাখ্যা, “যখন অখিলেশের গোটা পরিবার ওর সঙ্গে ডিম্পলের বিয়ের বিরোধিতা করছিল, একমাত্র আমিই ওকে সমর্থন করেছিলাম। ওর বিয়ের এমন কোনও ফোটো নেই, যাতে এই দালাল উপস্থিত নেই। আমি হয়তো মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের সঙ্গে না-ই থাকতে পারি, কিন্তু মুলায়ম-পুত্র অখিলেশের পাশে সব সময় থাকব।”
অমর দিল্লিতে। দলীয় সূত্রের খবর, মুলায়মের নির্দেশে উত্তরপ্রদেশে মহাজোট তৈরির সলতে পাকাচ্ছেন। অখিলেশের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিটা মিটিয়ে নিচ্ছেন না কেন? অমরের অভিমানী যুক্তি, “রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আমার দেখা হয়ে যায়। কিন্তু অখিলেশের দর্শন পাওয়া যায় না।”
সমাজবাদী শিবির এখন কার্যত দু’ভাগ। একদিকে শিবপাল ও অমর। সে দিকেই মুলায়মের সমর্থন। অন্য দিকে অখিলেশ, মুলায়মের খুড়তুতো ভাই রামগোপাল যাদব। গৃহযুদ্ধের জেরে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যে রামগোপাল অমরকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। আজ কপট আতঙ্ক প্রকাশ করে অমর বলেন, “আমার দুটো কমবয়সি মেয়ে রয়েছে। রামগোপালের হুমকি দেওয়া বিবৃতির পর থেকে বেশ ভয়ে রয়েছি। আমার কিছু হলে উনিই দায়ী থাকবেন”।
দলের সভায় অখিলেশ দায়ী করেছিলেন, অমর তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। তাঁকে অওরঙ্গজেব, মুলায়মকে শাহজাহান আখ্যা দিয়ে দলের এক বিধায়কের লেখা চিঠি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে। অমরের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। ওই বিধায়ককেও তিনি চেনেন না।
উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে অখিলেশকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে শিবপালকে সেই দায়িত্ব দিয়েছেন মুলায়ম। সেখান থেকেই প্রকাশ্য বিবাদ শুরু। যার জন্য অমরকেই দায়ী করেছেন অখিলেশ। অমরের জবাব, এর আগে যখন শিবপালকে সরিয়ে অখিলেশকে রাজ্য সভাপতি পদে বসানো হয়েছিল, তখনও বলা হয়েছিল, এর পিছনে তিনিই আছেন। শিবপাল তখন নতুন রাজ্য সভাপতিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। দুঃখের কথা হল, এ বার উলট-পুরাণের জন্য তাঁকেই দায়ী করছেন অখিলেশ।