সিবিআই বনাম সিবিআইয়ের লড়াইয়ে সাত দিনের জন্য স্বস্তি পেলেন স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। আজ দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, আগামী সোমবার পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে। পাশাপাশি, আস্থানা আবার সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মার বিরুদ্ধে যে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, তার জবাবও বর্মাকে সোমবার দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মাংস ব্যবসায়ী মইন কুরেশি মামলার তদন্তকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে প্রায় আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে সিবিআই। কাল সিবিআই দফতরে হানা দিয়ে সিবিআই অফিসাররাই আস্থানার ঘনিষ্ঠ অফিসার দেবেন্দ্র কুমারকে গ্রেফতার করেন। আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে আগেই। অলোক তাঁকে সাসপেন্ড করার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এই অবস্থায় সম্ভাব্য গ্রেফতারি এড়াতে এ দিন আগাম দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আস্থানা। মধ্যাহ্নবিরতির পরে বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরির বেঞ্চে মামলাটি ওঠে।
আস্থানার আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, আস্থানার বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে এফআইআর করা হয়েছে। মইন কুরেশি মামলায় যাঁকে (অলোক বর্মা) গ্রেফতার করার জন্য আস্থানা আগে সুপারিশ করেছিলেন, তিনিই এখন অভিযোগকারী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। পাল্টা সওয়ালে সিবিআইয়ের আইনজীবী কে রাঘবচারুলু দাবি করেন, মইন কুরেশির কাছ থেকে দু’কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন আস্থানা। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইন ছাড়াও, ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, তোলা আদায়, জালিয়াতির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। রাঘবচারুলু-ই এর আগে সারদা মামলায় সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করতেন, যেখানে সারদা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন আস্থানা।
দু’পক্ষের শুনানির পরে বিচারপতি সাত দিন স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। ওই সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা যাবে না আস্থানাকে। তবে তদন্ত যেমন চলছে, চলবে। আস্থানাকে তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ এবং অন্য সমস্ত ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আস্থানা যে বর্মার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন, সে বিষয়ে জবাব চেয়ে সিবিআই প্রধান, সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর ও পার্সোনেল মন্ত্রককে নোটিস পাঠিয়েছে আদালত।
পাতিয়ালা কোর্টের সিবিআই আদালত অবশ্য দেবেন্দ্র কুমারকে এক সপ্তাহের জন্য সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। মইন কুরেশি মামলায় যে এসআইটি গঠন করা হয়, তার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন দেবেন্দ্র। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী সানা সতীশ বাবুর বিবৃতি জাল করে মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট লেখার অভিযোগ এনেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানান, সানার বিবৃতির ভিত্তিতেই অলোকের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনেন আস্থানা। দেবেন্দ্র অভিযোগকারীদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে তোলা নিতেন বলেও সিবিআইয়ের দাবি।