সবার জন্য শিক্ষা শিকেয়: রিপোর্ট

বরাদ্দ অর্থ খরচে রাজ্যের ব্যর্থতা: বিরোধীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কেন্দ্র শিক্ষা খাতে সরকারি অনুদান ক্রমাগত কমাচ্ছে। ফলে প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যের সমস্যা হচ্ছে।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ১২:২০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

দেশের সব শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসতে ২০১০ সালে শিক্ষায় অধিকার আইন এনেছিল মনমোহন সিংহের সরকার। কিন্তু রূপায়ণের সাত বছর পরেও লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যায়নি বলে রিপোর্ট দিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। বার্ষিক বরাদ্দ খরচ করতে না পারা, পরিকাঠামোগত অসুবিধে এবং সরকারি স্তরে পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণের অভাবেই এই পরিকল্পনা সফল হতে পারছে না বলে গত কাল প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানিয়েছে সিএজি।

Advertisement

রিপোর্টে সমস্যা বিশ্লেষণ করে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল—

বরাদ্দ অর্থ খরচে রাজ্যের ব্যর্থতা: বিরোধীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কেন্দ্র শিক্ষা খাতে সরকারি অনুদান ক্রমাগত কমাচ্ছে। ফলে প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সিএজি জানাচ্ছে, ফি বছর গড়ে ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে ব্যর্থ হচ্ছে রাজ্যগুলি। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষের শুরুতে কেন্দ্রের ঘরে খরচ না হওয়া ১২,৪১১ কোটি জমা ছিল বলে জানিয়েছে সিএজি। আর টাকা না খরচ করার এই তালিকায় একেবারে উপরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দেখা যাচ্ছে, ওই সময় ১৯৯২ কোটি খরচ করে উঠতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলি।

Advertisement

আরও পড়ুন: ইসলাম না নিলে হাত-পা কাটা হবে, হুমকি চিঠি মালয়ালি লেখককে

পরিকাঠামোগত দুর্বলতা: কাঙ্খিত ফল না মেলার জন্য পরিকাঠামোগত অসুবিধাকে দায়ী করেছে সিএজি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত অধিকাংশ রাজ্যেই মানা হয় না। ১০০-১২০ জন পড়ুয়ার প্রাথমিক স্কুলে যেখানে অন্তত চার জন শিক্ষক থাকা প্রয়োজন, সেখানে বেশির ভাগ স্কুল দু’জন শিক্ষককে দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। সমীক্ষা বলছে, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষকের পদ খালি। উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাটি অর্ধেকের কাছাকাছি। আর বিহার, রাজস্থান বা প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাতে এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক পদ শূন্য। রিপোর্টে বলা হয়েছে, একজনও শিক্ষক না থাকায় উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালগাঁও জুনিয়র হাইস্কুলটি ২০১৩ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। ওই জেলারই খিখিরটোলা উর্দু ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে গত পাঁচ বছর ধরে উর্দু পড়ানোর কোনও শিক্ষক নেই। নেই কোনও উর্দু বইও। শিক্ষকের অভাবে কোনও ক্লাস না হলেও পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়া হয় ওই স্কুলে। পাশাপাশি পড়ুয়ার অনুপাতে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা কম, খেলার মাঠ না থাকা, প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের জন্য র‌্যাম্পের ব্যবস্থা না থাকা বা ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচাগারের অভাবও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বড় মাপের অন্তরায় সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছে সিএজি।

নিয়ম বর্হিভূত ভাবে পাশ-ফেল প্রথা চালু রাখা: এখনও অবধি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও পড়ুয়াকে ফেল করাতে পারে না স্কুল। কিন্তু সিএজি বলছে, অসম, রাজস্থান, অরুণাচল প্রদেশ, কেরল, সিকিমের মতো রাজ্যে বহু স্কুলেই ওই নিয়ম মানা হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন