মেঝের বিছানায় রাত কাটলেও স্বস্তি শশীর

স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। সঙ্গে কারাবাসের বিড়ম্বনা। তবে আজ সামান্য হলেও স্বস্তি বোধ হয় পেলেন শশিকলা। যাঁকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে জেলযাত্রা করেছিলেন গত কাল, সেই পালানিসামিকেই আজ মুখ্যমন্ত্রী বেছেছেন রাজ্যপাল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২০
Share:

স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। সঙ্গে কারাবাসের বিড়ম্বনা। তবে আজ সামান্য হলেও স্বস্তি বোধ হয় পেলেন শশিকলা। যাঁকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে জেলযাত্রা করেছিলেন গত কাল, সেই পালানিসামিকেই আজ মুখ্যমন্ত্রী বেছেছেন রাজ্যপাল। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সেই শপথগ্রহণ কি দেখা হল শশীর, বেঙ্গালুরুর পারাপ্পানা অগ্রহর সেন্ট্রাল জেলের অন্তরাল থেকে? জবাব জানা নেই।

Advertisement

আসলে গত কাল জেলে পৌঁছেই নিজের সেলে টিভি চেয়েছিলেন এডিএমকে শীর্ষ নেত্রী। পাননি। শশীর আরও দাবি ছিল, যে হেতু তিনি ডায়াবেটিসের রোগী, তাই প্রথম শ্রেণির কয়েদিদের জন্য নির্ধারিত সেলে তাঁকে রাখা হোক। এই বন্দিরা আলাদা খাবারদাবার-সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধে পেতে পারেন। ধ্যান করার জন্য আলাদা একটি জায়গাও চেয়েছিলেন শশিকলা। আর্জি জানিয়েছিলেন, তিনি চাওয়ামাত্রই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা যেন থাকে। এ সব দাবির কোনওটিই মঞ্জুর হয়নি। এমনকী গত কাল রাতে ঘুমোনোর জন্য একটা চৌকিও পাননি শশী। দেওয়া হয়েছিল মাদুর আর কম্বল। তা পেতে অগত্যা মেঝেতেই বিছানা করেন। তবে অনেকে বলেছেন, সাজার মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত শশীকে মেঝেতেই শুতে হবে কি না, সেই বিষয়টি ডাক্তারদের মতামতের উপরেই নির্ভর করবে।

ঘুম কি হয়েছিল? সেই খবরও কারাগারের প্রাচীরের বাইরে আসেনি। তবে জানা গিয়েছে, বেশ ভোরেই আজ বিছানা ছাড়েন শশিকলা। প্রথমেই ধ্যানে বসেন। মিনিট কয়েক পরেই উঠে যান। কিছু ক্ষণ পর প্রাতরাশ। তেঁতুলের টক দিয়ে ভাত। শাস্তি না পেলে আজকের দিনটায় হয়তো মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতেন। কিন্তু কোথায় চেন্নাইয়ের রাজভবন আর কোথায় বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল জেল!

Advertisement

এই জেলের খুব একটা সুনাম নেই। বারবার অভিযোগ ওঠে, কয়েদিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য পরিষেবা যথেষ্ট নয় এখানে। অবশ্য এই ঠিকানাও শশীর কাছে নতুন নয়। ২০১৪ সালে তিন সপ্তাহ বন্দি ছিলেন এই সেন্ট্রাল জেলেই। কিন্তু সে বারের ব্যাপারটাই ছিল আলাদা। জয়ললিতাও তখন বন্দি ছিলেন এই জেলে। আর প্রাচীরের ও-পারে অপেক্ষায় ছিলেন আম্মার অসংখ্য ভক্ত। এখন আম্মা নেই। চিন্নাম্মার জন্যও এখন জেলের বাইরে অপেক্ষায় নেই তেমন কেউ।

সবাই আজ ব্যস্ত ছিলেন চেন্নাইয়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে।

এ ভাবেই কাটাতে হবে চারটে বছর। রাজ্য ছেড়ে, ক্ষমতা ছেড়ে, বৈভব-বিচ্ছিন্ন হয়ে। তবে ঠিক সঙ্গীহীন হয়ে দিন কাটাতে হবে না শশীকে। কারণ, তাঁর বৌদি এলাভারসি এবং বোনপো সুধাকরণও রয়েছেন একই জেলে। এঁরা ছাড়া শশিকলার ভরসা হবেন জেলের মানসিক-সহায়কেরা। যাঁরা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবেন তাঁকে। শোনা যাচ্ছে, জেলে মোমবাতি তৈরি করতে হবে শশিকলাকে। সে জন্য দৈনিক অল্প কিছু টাকাও পাবেন।

অন্ধকার কাটাতে শশীকে আর কী কী করতে হবে, কে জানে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন