Supreme Court

ধনী ও ক্ষমতাবানদের হস্তক্ষেপ বিচারব্যবস্থায়, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ শীর্ষ আদালতের

তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, যখনই কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকেন, তখনই বিচারব্যবস্থাকে কালিমালিপ্ত করার খেলা চলে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৪৭
Share:

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।

দেশের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ। তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়ককে। একই সঙ্গে এই তদন্তে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশ, সিবিআই এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানকে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, ‘‘বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার এই অভিযোগ এতটাই গুরুতর, যে তাঁর নির্দিষ্ট তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’

Advertisement

ঘটনার শুরু দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেরই এক প্রাক্তন মহিলা কর্মী যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনার পর থেকে। এর পরই উৎসব বইন্স নামের এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, প্রধান বিচারপতিকে কালিমালিপ্ত করতে ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে। এই ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠার জন্য তাঁকে দেড় কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। ষড়যন্ত্রের সমস্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ আদালতে একটি হলফনামাও জমা দেন তিনি। সেই অভিযোগই আজ খতিয়ে দেখে বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এর পরই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েকের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।

যদিও এই তদন্তের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্তের কোনও যোগ থাকবে না এবং দু’টি তদন্ত আলাদা ভাবে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্তে বিচারপতি ববদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অন্য একটি প্যানেল ইতিমধ্যেই তৈরি করেছে শীর্ষ আদালত। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনার তদন্তে নোটিস পাঠানো হয়েছে অভিযোগকারিণীকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের নালিশ, সমাধান না করেই কমিশনের ঘোষণায় বিভ্রান্তি

আজ এই অভিযোগের শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের হাতে দেশের শীর্ষ আদালতকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। বিশেষ বেঞ্চের প্রধান অরুণ মিশ্রের কথায়, ‘‘ধনী ও ক্ষমতাবানদের স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে, ওঁরা আগুনের সঙ্গে খেলছেন। কেউ বিচারব্যবস্থায় কোনও উন্নতি করতে চাইলেই তাঁকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন। খুন করছেন। এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’

একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, ‘‘গত তিন-চার বছর ধরেই দেশের শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। কিন্তু অর্থশক্তি হোক বা রাজনৈতিক শক্তি, কোনও কিছু দিয়েই রিমোট কন্ট্রোলে চালানো যাবে না বিচারব্যবস্থাকে।’’ বিচারব্যবস্থায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগের শুনানির সময় তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, যখনই কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত থাকেন, তখনই বিচারব্যবস্থাকে কালিমালিপ্ত করার খেলা চলে।

আরও পড়ুন: আসানসোলে বিজেপি নেতাকে বেধড়ক মার, আক্রান্ত আরও ৫, কাঠগড়ায় তৃণমূল

আইনজীবী উৎসব বইন্সের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টেরই বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মীর সাহায্যে চলছিল প্রধান বিচারপতিকে কালিমালিপ্ত করার ষড়যন্ত্র। অনিল অম্বানির একটি মামলায় রায় বদলে দেওয়া হয়েছিল এই দুই কর্মীর মদতেই। এর পরই এই দুই কর্মীকে বরখাস্ত করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামাতেও উৎসব জানান, এই মামলায় লড়ার জন্য তাঁকে দেড় কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন