ব্যক্তিপরিসর নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেচ্ছাচারের উপরে নিয়ন্ত্রণ আসবে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট আইনজীবীরা।
শুধু রাজনৈতিক জীবনে নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বিপুল ভাবে বাড়ছে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইন্টারনেট-নির্ভর সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা। কিন্তু নানা ঘটনায় বারবার অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক নেতা বা সেলিব্রিটিদের ক্ষেত্রে তো বটেই, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতাও খর্ব করা হচ্ছে। সম্মানহানি এবং নানা ধরনের নেতিবাচক, মিথ্যা প্রচারেরও শিকার হচ্ছেন অনেকে। কার্টুন ফরোয়ার্ড করায় অম্বিকেশ মহাপাত্রকে ৬৬এ তথ্যপ্রযুক্তি আইনে গ্রেফতার করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ।
এ বারে কী হবে?
আরও পড়ুন:শীর্ষ আদালতে স্বীকৃতি পেল ব্যক্তিপরিসর
আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘কোনও নাগরিক যদি অভিযোগ করেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ব্যক্তিপরিসরে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে এবং তার জন্য তিনি যদি আদালতের কাছে প্রতিকার চান, তখন আজকের নির্দেশ বিশেষ প্রেক্ষিত হিসেবে কাজ করবে।’’ আর এক আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও একটি নির্দেশ সব মামলার ক্ষেত্রে কার্যকর হয় না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগটি বিচার করে সে ক্ষেত্রে আদালত ব্যবস্থা নেবে।’’
ভারতে তথ্য সুরক্ষা নিয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট আইন না থাকলেও আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলির মতো বহু দেশেই এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের রায়ের পরে কেন্দ্র কি নতুন আইন আনবে? এমনিতেই হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকে ব্যবহারকারীর তথ্য বিনিময়ের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলায় কেন্দ্র জানিয়েছে, নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য তাঁর মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। সেই তথ্য ফাঁসের অর্থ সংবিধানের ২১তম অনুচ্ছেদে জীবনের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা। সরকারের পক্ষ থেকে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কিছু নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিল কেন্দ্র। এ দিনের রায়ের পরে সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল ইন্টারনেট সুরক্ষা ও তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, তথ্যসুরক্ষা নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটি দ্রুত রিপোর্ট দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই নতুন সুরক্ষাকবচ তৈরি হবে।