রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্যের সঙ্গে নেফিয়ু রিও এবং জোটের অন্য নেতারা। -নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফলাফলে রাজ্য হাতে আসার পরেই নাগা চুক্তির তারিখ ঘোষণা করে দিলেন নেফিয়ু রিও। বিজেপি-এনডিপিপি-জেডিইউ জোট ‘পিপলস ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’-এর হয়ে রবিবার সকালেই নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্যের কাছে সরকার গড়ার দাবিপত্র পেশ করেন রিও। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, আপাতত সরকারের প্রধান লক্ষ্য নাগা চুক্তি। ১০ অগস্ট ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও চুক্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ওই চুক্তির মাধ্যমে ভারত-নাগা সমস্যার বহু প্রতীক্ষিত রাজনৈতিক সমাধান হতে চলেছে। ওই চুক্তিতে রাজ্যের বিকাশ, রেল যোগাযোগ ও পরিকাঠামো উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
নাগাল্যান্ডে গত কাল রাত পর্যন্তও রিওর সরকার গড়ার নিশ্চয়তা ছিল না। ভোটগণনায় সমানে-সমানে চলা লড়াইয়ের শেষ পর্বে হেরে যান টি আর জেলিয়াং। ভোট গণনার পরে এনপিএফ ও জোট ৩০টি আসন পেয়েছিল বলে জানানো হয়। কিন্তু টেনিং কেন্দ্রে গণনায় ভুল থাকায় ফের ভোট গোনা হল। জানা গেল, পূর্বঘোষণা মতো বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর ভাই এন আর জেলিয়াং নন, আদতে টেনিং কেন্দ্রে জিতেছেন এনডিপিপি প্রার্থী নামরি। আগেই নির্দল প্রার্থী টংপাং ওঝোকুং আর জেডিইউ প্রার্থী কাইতো আয়ে এনডিপিপি-বিজেপি জোটকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। নামরির জয়ে বিজেপি জোটের শক্তি বেড়ে ৩২ হয়। এনপিএফ জোটের আসন কমে দাঁড়ায় ২৯। আজ ৩২ জনের নামের তালিকা রাজ্যপালের কাছে জমা দেন রিও। পদত্যাগ করেন জেলিয়াং।
আরও পড়ুন- মেঘালয়ে গভীর রাতে রাজভবনে কংগ্রেস, জোট বাড়াচ্ছে বিজেপি
আরও পড়ুন- বামের ধস, রামের উত্থান, কেন এত চমকে দিল ত্রিপুরা
প্রাক নির্বাচনী জোটে স্বাক্ষর করার পরেও ভোটের পরে যে ভাবে দল বদলালেন আয়ে, তাতে মর্মাহত জেলিয়াং। কিন্তু আয়ে এনডিপিপি ও রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে জানান, রাজ্যের ভবিষ্যত ও স্থিতিশীল সরকারের কথা ভেবেই তিনি শিবির বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিদ্ধান্তকে সমর্থন দেন রাজ্য জেডিইউ সভাপতি সেনচুমো লোথা। ফলে ২৭টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েও এনপিএফের সরকার গড়ার আশা শেষ হয়। তারা শেষ চেষ্টা হিসেবে বিজেপিকে পাশে টেনে সরকার গড়তে চাইলেও বিজেপি রিওর হাত ছাড়েনি।
এ দিকে, এ বারের নাগাল্যান্ড ভোটে ৩৮ জন বর্তমান বিধায়কের জয় এবং কংগ্রেসের একটিও আসন না পাওয়া নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জি কে জিমোমি বলেন, “১৫ বছরের অপশাসন, দুর্নীতি সর্বত্র দৃশ্যমান। মন্ত্রী-বিধায়করা ইচ্ছেমতো রাজ্যের সম্পদ ব্যবহার করেছেন, স্বার্থের জন্য দল বদলেছেন। তার পরেও আশ্চর্যজনক ভাবে মানুষ একই নেতাদের ভোট দিলেন।”