লালু-নীতীশের দল কোণঠাসা আদিত্য হত্যায়

জেডিইউ বিধায়কের ছেলের গুলিতে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়লেন নীতীশ কুমার ও লালু প্রসাদ। পটনার পাশাপাশি সংসদেও এ নিয়ে একঘরে দেখিয়েছে জেডিইউ ও আরজেডিকে। তার মধ্যেই অভিযুক্ত রকি যাদবকে খুঁজতে কলকাতায় এসেছে গয়া পুলিশের দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০৩:৫৯
Share:

জেডিইউ বিধায়কের ছেলের গুলিতে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়লেন নীতীশ কুমার ও লালু প্রসাদ। পটনার পাশাপাশি সংসদেও এ নিয়ে একঘরে দেখিয়েছে জেডিইউ ও আরজেডিকে। তার মধ্যেই অভিযুক্ত রকি যাদবকে খুঁজতে কলকাতায় এসেছে গয়া পুলিশের দল।

Advertisement

গয়ার ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া আদিত্য সচদেবের হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তাল বিহার রাজনীতি। নিহত ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, শনিবার বুদ্ধগয়া থেকে ফেরার পথে বিধান পরিষদের জেডিইউ সদস্য মনোরমা দেবীর ছেলে রকির গাড়িকে ওভারটেক করে আদিত্যর গাড়ি। তার জেরেই আদিত্যকে গুলি করে রকি।

কাল থেকেই বিহারে জঙ্গলরাজ ফেরার দাবি করে আসরে নেমেছেন বিরোধীরা। আজ পটনায় বিষয়টি নিয়ে দৃশ্যতই বিব্রত দেখিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। গত কালই কেরলে প্রচার শেষ করে বিহারে ফিরেছেন তিনি। আজ আবার ছিল ‘জনতা দরবার’। সেখানে মানুষের সঙ্গে দেখা করার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘অপরাধ আটকানো যায় না। প্রশাসনকে আইন মেনে কাজ করতে দেওয়া উচিত।’’ জঙ্গলরাজ নিয়ে নীতীশের জবাব, ‘‘ওটা বিজেপির কৌশল। ওদের কাছে কে অপরাধ করেছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অপরাধীর শাস্তি চাই।’’ আদিত্য হত্যার প্রতিবাদে এ দিন গয়া বন্‌ধের ডাক দেয় বিজেপি।

Advertisement

সংসদে জিরো আওয়ারে জেডিইউ-আরজেডিকে কোণঠাসা করেন বিজেপি ও অন্য দলের সাংসদেরা। জনার্দন সিগ্রিবাল, অশ্বিনী চৌবেরা অভিযোগ করেন, লালু প্রসাদের আমলে বিহারে জঙ্গলরাজ ছিল। এখন নীতীশ ও লালু প্রসাদের সরকারে জঙ্গলরাজ-টু শুরু হয়েছে। আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত বাহুবলী সাংসদ পাপ্পু যাদবের অভিযোগ, ‘‘ভোটে মাফিয়া ডনদের টিকিট দেওয়ার খেসারত দিচ্ছেন নীতীশ–লালুরা।’’ তিনি বিহারে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছেন। একই দাবি রামবিলাস পাসোয়ানেরও। বিহারের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, ‘‘নীতীশ প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার স্বপ্ন দেখা ছেড়ে বরং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মনোযোগ দিন।’’ আরজেডির জয়প্রকাশ নারায়ণ যাদব বলেন, ‘‘একটা অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। প্রশাসন বসে নেই। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

গত কালই রকির বাবা বিন্ধেশ্বরী প্রসাদ ওরফে বিন্দি যাদবকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেডিইউয়ের ওই বাহুবলী নেতার বিরুদ্ধে ছেলেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অভিযোগ এনেছে তারা। ওই নেতার বিরুদ্ধে মাওবাদীদের অস্ত্র জোগান দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে মনোরমা দেবীর দেহরক্ষী রাকেশ কুমার। ঘটনার সময়ে রাকেশ রকির গাড়িতে ছিল। সেও গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। আজ দু’জনেরই পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ছেলেকে এখনও নির্দোষ বলে দাবি করছেন মনোরমা ও বিন্দি, দু’জনেই। এ দিন আদালতে শুনানির পরে বিন্দি বলেন, ‘‘আমি বাইরে থাকলে বরং রকি তাড়াতাড়ি আত্মসমর্পণ করত।’’

বিহার পুলিশ সূত্রে খবর, রকি কোথায় আত্মগোপন করতে পারে তা কালই স্থির করে ফেলেন তদন্তকারীরা। তালিকায় বারাণসী, দিল্লির পাশাপাশি রয়েছে কলকাতাও। কারণ, কলকাতায় ওই পরিবারের বেশ কয়েক জন আত্মীয় রয়েছেন। এ দিন কলকাতায় এসেছে গয়া পুলিশের দল। গয়ার এসএসপি গরিমা মালিক বলেন, “একাধিক সূত্র পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে।” ঘটনার পর থেকে জ্ঞান হারাচ্ছেন আদিত্যর মা। আজ তিনি বলেন, “সুশাসনের সরকার এক মাকে মাদার্স ডে-তে এই উপহার দিল! এর বিচার চাই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement